পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্য আজ: বিশ্বনেতাদের জমজমাট উপস্থিতি

ভ্যাটিকান সিটির সেন্ট পিটার্স স্কোয়ারে আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্য, যেখানে যোগ দিতে ইতোমধ্যেই ভিড় জমিয়েছেন হাজার হাজার শোকাহত মানুষ, বিশ্বনেতা, ক্যাথলিক ধর্মযাজক ও রাজপরিবারের সদস্যরা। ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বব্যাপী প্রভাব বিস্তারকারী এই পোপের বিদায়ে এক অনন্য বিশ্বসমাগমের সৃষ্টি হয়েছে।

অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার, প্রিন্স উইলিয়াম, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, স্পেনের রাজা ষষ্ঠ ফিলিপ ও রানি লেটিজিয়া এবং ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা ডা সিলভা ও ফার্স্ট লেডি জানজা। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসও ইতোমধ্যে ভ্যাটিকানে পৌঁছেছেন।

ডাউনিং স্ট্রিট এক বিবৃতিতে পোপ ফ্রান্সিসকে "গরিব, নিপীড়িত ও বিস্মৃতদের পোপ" আখ্যা দিয়েছে এবং তার নেতৃত্বকে ‘সাহসী’ বলে প্রশংসা করেছে। রাজা চার্লসের পক্ষ থেকে প্রিন্স উইলিয়ামের অংশগ্রহণও এ অনুষ্ঠানের গুরুত্বকে বাড়িয়ে তুলেছে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্যাথলিক জনগোষ্ঠী ব্রাজিল থেকে প্রেসিডেন্ট লুলা ডা সিলভার যোগদানের পাশাপাশি দেশটিতে সাত দিনের শোক পালন করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে পোপের মৃত্যুর পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সমস্ত ফেডারেল ও রাজ্য পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেন।

পোপ ও ট্রাম্পের মধ্যে অতীতে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিরোধ থাকলেও, শেষকৃত্যে ট্রাম্পের অংশগ্রহণ তার প্রতি রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের ইঙ্গিত দেয়। পোপ একসময় ট্রাম্পের সীমান্তে দেয়াল তোলার প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বলেছিলেন, "দেয়াল নয়, সেতু নির্মাণ করা উচিত।" এর জবাবে ট্রাম্প বলেছিলেন, "একজন ধর্মীয় নেতার উচিত নয় কারও বিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন তোলা।"

এছাড়াও অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট মার্কোস জুনিয়র, ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি ওলেনা জেলেনস্কা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী, জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেস, ইটালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মিলেই, পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দরজেজ ডুডা, বেলজিয়ামের রাজা ফিলিপ ও রানি মাতিলদে, এবং ইকুয়েডর ও ক্রোয়েশিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানসহ আরও অনেক বিশ্বনেতা ও প্রতিনিধি।

অনুষ্ঠানে অতিথিরা ব্যাসিলিকার দিকে মুখ করে সাজানো আসনে বসবেন। ফরাসি বর্ণানুক্রমে আসনবিন্যাসে আর্জেন্টিনা ও ইতালির শীর্ষ নেতৃত্ব সামনের সারিতে থাকবেন।

বিশ্বের ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বীদের জন্য এ এক শোকের দিন। তবে আজকের এই সমাবেশে পোপ ফ্রান্সিসের জীবনের অন্তিম মুহূর্তে বিশ্ব মানবতার একতা ও সৌহার্দ্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে তার বিদায়ী অনুষ্ঠানটি।