কাশ্মীরের পাহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের ওপর জঙ্গি হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েন চরমে পৌঁছেছে। পাল্টাপাল্টি সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে এবার পাকিস্তান স্থগিত করেছে ১৯৭২ সালের ঐতিহাসিক সিমলা চুক্তি।
ভারতের পক্ষ থেকে সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি ও সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধের পর পাকিস্তান পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় আকাশপথ নিষিদ্ধ, কূটনীতিক বহিষ্কার এবং সব রকমের বাণিজ্য বন্ধের পাশাপাশি সিমলা চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দেয়।
বিশ্লেষকদের মতে, কাশ্মীর ইস্যু আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরার পথ সুগম করতেই ইসলামাবাদ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ, সিমলা চুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা ছিল—দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমেই ভারত-পাকিস্তান সব বিরোধ নিষ্পত্তি করবে।
তবে ভারতের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তে বিশেষ প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন কূটনীতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মহেন্দ্র পি লামা বলেন, “সিমলা চুক্তি স্থগিত হলে ভারতের ওপর তার কোনো বাস্তব প্রভাব পড়বে না। বরং পাকিস্তান নিজেরাই প্রতিদিন এই চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে আসছে। তিনি আরও বলেন, “কাশ্মীর ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ৩৭০ ধারা বাতিল ভারতীয় সংবিধানের আওতাভুক্ত ছিল। এতে সিমলা চুক্তি লঙ্ঘনের প্রশ্নই আসে না।”
১৯৭১
সালের যুদ্ধের পর ভারতের তৎকালীন
প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এবং পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট
জুলফিকার আলী ভুট্টো হিমাচল
প্রদেশের সিমলায় এই চুক্তিতে স্বাক্ষর
করেন। এর আওতায় নিয়ন্ত্রণ
রেখা (LoC) নির্ধারিত হয় এবং শান্তিপূর্ণ
সমঝোতার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। পাকিস্তানের ৭৩
হাজার যুদ্ধবন্দির বিনিময়ে ভারত দখলকৃত ৫
হাজার বর্গমাইল এলাকা ফিরিয়ে দেয়।
পাকিস্তানের অভ্যন্তরে অনেকেই মনে করছেন, চুক্তি স্থগিত করে এখন তারা কাশ্মীর ইস্যু জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে আরও জোরালোভাবে তুলতে পারবে। যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, অতীতে এমন চেষ্টার ফল খুব বেশি সফল হয়নি।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?