ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলু গ্রেপ্তার, তুরস্কে ব্যাপক বিক্ষোভ

তুরস্কের ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার করেছে আদালত, দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে। শনিবার থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ গত রাতে তুরস্কের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের পর, দেশটির প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমর্থকদের উদ্দেশে বলেছে, ‘হতাশার কিছু নেই! লড়াই চালিয়ে যাও।’ এই গ্রেপ্তারের ঘটনার সময় তাঁর দল সিএইচপির প্রাইমারিতে ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁকে দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য ভোটাভুটি চলছিল।

ইমামোগলুকে গ্রেপ্তার করা হয় মূলত দুর্নীতির অভিযোগে, তবে তার বিরুদ্ধে আরও একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে, যেমন সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহযোগিতা করা, ঘুষ নেওয়া, চাঁদাবাজি এবং ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণে বেআইনি কাজ। তিনি এই অভিযোগগুলোকে ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন।

এদিকে, রোববার রাতে তুরস্কে ভয়াবহ বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে, যা গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড়। ইমামোগলুর গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে অন্তত ১০ হাজার বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে আসেন। পুলিশ এই বিক্ষোভ দমন করতে টিয়ার গ্যাস এবং রাবার বুলেট ব্যবহার করে।

ইমামোগলু গ্রেপ্তারের পর তাঁর স্ত্রী দিলেক কায়া ইমামোগলু সিটি হলের বাইরে জড়ো হওয়া জনতার উদ্দেশে বলেন, তাঁর স্বামীর প্রতি করা ‘অন্যায়’ প্রতিটি বিবেকবান মানুষের মনে নাড়া দিয়েছে।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্কের ৮১টি প্রদেশের মধ্যে অন্তত ৫৫টি প্রদেশে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে তুরস্কের দুই তৃতীয়াংশ অঞ্চলে এই প্রতিবাদ দেখা গেছে।

ইমামোগলু গ্রেপ্তারের পাশাপাশি আরও ১০০ জনকে আটক করা হয়েছে, যার মধ্যে রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক এবং ব্যবসায়ীও রয়েছেন। তাঁকে সিলিভরি কারাগারে রাখা হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে বিচারের আগে তাকে হেফাজতে রাখা হয়েছে। তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, ইমামোগলুকে মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।