কানাডার ক্রীড়াজগতের একসময়কার উজ্জ্বল নক্ষত্র রায়ান ওয়েডিং। ২০০২ সালের শীতকালীন অলিম্পিক্সে স্নোবোর্ড ইভেন্টে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাড়া ফেলেছিলেন তিনি। কিন্তু ক্রীড়া জীবনের অবসানের পর তিনি পা বাড়ান অন্ধকার জগতে। বর্তমানে রায়ান ওয়েডিং এফবিআইয়ের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় নাম লিখিয়েছেন।
অলিম্পিক গেমসের গৌরবময় অধ্যায়ের পর, ওয়েডিং ধীরে ধীরে অপরাধ জগতে জড়িয়ে পড়েন। খুন, মাদক পাচারসহ নানা অপরাধমূলক কার্যকলাপে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন তিনি। ২০১০ সালে তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়ে চার বছরের কারাদণ্ডও ভোগ করেন। কিন্তু কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর অপরাধের পথ ছেড়ে না ফিরে, আরও গভীরভাবে অপরাধ জগতে প্রবেশ করেন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই তাদের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকা প্রকাশ করেছে, যেখানে শীর্ষ ১০ অপরাধীর মধ্যে রয়েছে রায়ান ওয়েডিংয়ের নাম। এফবিআই জানিয়েছে, ওয়েডিং বর্তমানে মেক্সিকো বা লাতিন আমেরিকার কোনো দেশে লুকিয়ে আছেন। তাকে ধরিয়ে দিতে পারলে ১ কোটি মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
ওয়েডিং একটি শক্তিশালী অপরাধ সংগঠন পরিচালনা করতেন, যার মূল কাজ ছিল কলম্বিয়া থেকে মাদক সংগ্রহ করে মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস এবং পরে কানাডায় পৌঁছে দেওয়া। এই চোরাচালানের সময় তিনি একাধিক হত্যাকাণ্ডেও জড়িত হন। ২০২৩ সালে কানাডার অন্টারিওতে দুই ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
রায়ান ওয়েডিং দীর্ঘদিন ধরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়িয়ে চলেছেন। তিনি ‘এল জেফে’, ‘জায়ান্ট’ এবং ‘পাবলিক এনিমি’ নামে পরিচিত ছিলেন। এফবিআই মাত্র একবার তাকে আটক করতে সক্ষম হলেও, ওয়েডিং পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
এফবিআই এবং কানাডার পুলিশ যৌথভাবে তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি এখন মেক্সিকো বা লাতিন আমেরিকার কোনো দেশে আত্মগোপনে রয়েছেন।
রায়ান ওয়েডিংয়ের এই চাঞ্চল্যকর যাত্রা ক্রীড়া জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র থেকে ভয়ংকর অপরাধীর রূপান্তরের এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?