চলচ্চিত্র বদলে দিতে পারে জীবন। ঈদ উপলক্ষে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘জংলি’ সিনেমা এমনই এক পরিবর্তনের গল্পের জন্ম দিয়েছে। রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্সে ছবিটি দেখে প্রভাবিত হয়েছেন দম্পতি আবির ও অদিতি। সিনেমা শেষে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন—একটি শিশু দত্তক নেবেন।
দম্পতির ভাষায়, এই সিদ্ধান্ত ছিল দীর্ঘদিনের চিন্তার ফল। তবে সামাজিক বাধা, পারিবারিক দ্বিধা ও অনিশ্চয়তা তাদের থামিয়ে রেখেছিল। ‘জংলি’ সিনেমাই যেন হয়ে উঠেছে সেই গা ঝাড়া দিয়ে ওঠার উপলক্ষ।
আবির বলেন, “ছবির সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো—শুধু জন্ম দিলেই বাবা-মা হওয়া যায় না। দায়িত্ব, ভালোবাসা ও স্নেহ দিয়েই বাবা-মা হওয়া যায়।”
অদিতি বলেন, “আমরা মেয়েরা বাবার কাছে রাজকন্যা। সেই ভালোবাসার গভীরতা এই সিনেমায় অসাধারণভাবে তুলে ধরা হয়েছে। আমি কেঁদেছি। আবির আমার হাত শক্ত করে ধরেছিল। আমরা বুঝে গেছি, সময় এসেছে।"
দম্পতির মতে, সিনেমায় শুধু বাবা-মেয়ের সম্পর্ক নয়, শিশুদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি, সচেতনতা, এবং গুড টাচ-ব্যাড টাচ—এই সবকিছুই বাস্তব ও মানবিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
সিনেমা দেখার পরপরই তারা যোগাযোগ করেছেন ঢাকার একটি শিশুশ্রম নিরসনকেন্দ্রের সঙ্গে। সেখানে একটি শিশু দত্তক নেওয়ার বিষয়ে তারা আলোচনা শুরু করেছেন। “এই সিদ্ধান্ত আমাদের দুজনের জন্য জীবনের সবচেয়ে বড় উপহার হতে যাচ্ছে,” বলেন আবির।
ছবিতে অভিনয় করেছেন সিয়াম আহমেদ, শবনম বুবলী ও প্রার্থনা ফারদিন দীঘি। সংগীত পরিচালনা করেছেন প্রিন্স মাহমুদ।
তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে এই সিনেমার সবচেয়ে বড় অর্জন—বাস্তব জীবনে একটি শিশুর নতুন বাবা-মায়ের খোঁজ পাওয়া। “এটা শুধু একটা সিনেমা নয়, আমাদের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া অভিজ্ঞতা,” বললেন অদিতি।
এই দম্পতির জীবনগল্পই প্রমাণ করে, ভালো সিনেমা শুধু বিনোদন নয়, সমাজ বদলের হাতিয়ারও হতে পারে।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?