পরিবারের দারিদ্র্য ঘোচাতে এবং সন্তানদের ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে ২০০৬ সালে সৌদি আরবের জেদ্দায় গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে যান কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার নাজিরপুর গ্রামের মালেকা খাতুন। কিন্তু বাস্তবতা তার জন্য ছিল ভিন্ন। নিয়োগকর্তার শোষণ, অপ্রত্যাশিত কম বেতন এবং চরম পরিশ্রমের মধ্যেও তিনি কাজ চালিয়ে যান।
মালেকা একবার দেশে ফিরতে পারলেও পরবর্তী ১৩ বছর তাকে দেশে আসতে দেওয়া হয়নি। তার নিয়োগকর্তা তার পাসপোর্ট ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আটকে রাখে। মাকে ফিরিয়ে আনতে তার সন্তান সোনিয়া ও স্বপন বহুবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। মালেকা খাতুনের দেশে ফেরার উদ্যোগ নেয় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম। সাংবাদিক সাইফুল রাজিবের সহায়তায় ব্র্যাকের মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের কথা জানতে পারেন মালেকা। সেখান থেকে দূতাবাস ও সৌদি আরবের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার ফেরার ব্যবস্থা করা হয়।
ব্র্যাক
মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান বলেন, "আমাদের কর্মীরা মালেকার পরিবারের কাছ থেকে তথ্য
সংগ্রহ করে কাজ শুরু
করেন। সবার প্রচেষ্টায় তিনি
অবশেষে সন্তানদের কাছে ফিরতে পেরেছেন।"
১৩ বছর পর মাকে
ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত মেয়ে
সোনিয়া খাতুন বলেন, "আমরা আশা ছেড়ে
দিয়েছিলাম। ভাবিনি মাকে আর দেখতে
পাবো। আজ ব্র্যাক আর
রাজিব ভাইয়ের কারণে আমরা মাকে ফিরে
পেয়েছি। আমরা তাদের প্রতি
কৃতজ্ঞ।"
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মালেকার ফেরার মুহূর্তে উপস্থিত ছিলেন এভসেক সিকিউরিটি ম্যানেজার স্কোয়াড্রন লিডার রাসেল আলুকদার। তিনি ব্র্যাকের কাজের
প্রশংসা করে বলেন, "বিমানবন্দরে
প্রবাসীদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে
আমরা একসঙ্গে কাজ করছি।" গত আট বছরে ব্র্যাক
মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টার ৩৫ হাজারেরও বেশি
প্রবাসীকে সহায়তা দিয়েছে। ২০২৪ সালেই ৪০
জন প্রবাসীকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে দেশে
ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
ব্র্যাকের
মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের ম্যানেজার এবং টিআইপি হিরো-২০২৪ পুরস্কারপ্রাপ্ত আল-আমিন নয়ন বলেন,
"প্রবাসে বিপদে থাকা বাংলাদেশিদের উদ্ধার
করতে আমরা সবসময় প্রস্তুত।
যারা সংকটে আছেন, তারা আমাদের সঙ্গে
যোগাযোগ করতে পারেন। আমরা
তাদের সাহায্য করার সর্বোচ্চ চেষ্টা
করবো।"
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?