কলকাতার কুমারটুলির গঙ্গার ঘাটে বুধবার সকালে ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। একটি স্যুটকেসের ভেতর থেকে উদ্ধার হলো এক নারীর মরদেহ। সন্দেহভাজন হিসেবে ঘটনাস্থল থেকে মা-মেয়েকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে, ঘাটে নিয়মিত যোগব্যায়াম করতে আসা কিছু স্থানীয় মানুষ একটি বেগুনি রঙের ট্রলি ব্যাগ টেনে নেওয়ার চেষ্টা করতে দেখেন দুই নারীকে। তাঁরা ব্যাগটি সরাতে না পারায় স্থানীয়দের সন্দেহ হয়।কাছে গিয়ে প্রশ্ন করতেই নারীরা ব্যাগ ধরতে নিষেধ করেন, যা আরও সন্দেহজনক হয়ে ওঠে।পরে পুলিশ ডাকা হয়, ব্যাগ খুলতেই বেরিয়ে আসে রক্তমাখা কাপড়ে মোড়ানো এক নারীর মরদেহ!
স্থানীয় যোগ প্রশিক্ষক রাজা সাউ জানান, প্রথমে ওই দুই নারী দাবি করেন ব্যাগে তাঁদের ল্যাব্রাডর কুকুরের মরদেহ রয়েছে। কিন্তু ব্যাগের ওজন দেখে সন্দেহ আরও বাড়ে। একটি কুকুরের ওজন ৩০-৪০ কেজি হতে পারে, তাই বলে দুজন মিলে টানতে পারবে না? আত্মহত্যার ঘটনা হলে মরদেহ কেন গঙ্গায় ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছিল? এরপরই এক নারী স্বীকার করেন, ব্যাগের ভেতর তাঁদের বৌদি সুমিতা ঘোষের মরদেহ।
পুলিশের হাতে আটক ফাল্গুনী ঘোষ ও তাঁর মা আরতি ঘোষ। নিহত সুমিতা ঘোষ ছিলেন ফাল্গুনীর কাকিমা। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছিল, তাঁরা কাজীপাড়া থেকে ট্রেনে কুমারটুলি আসেন। তবে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তাঁরা মধ্যমগ্রাম থেকে ভ্যানগাড়িতে ব্যাগ নিয়ে ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে আসেন, তারপর সেখান থেকে কুমারটুলিতে আসেন। তদন্তে জানা গেছে, মা-মেয়ে মধ্যমগ্রামের এক ভাড়া বাড়িতে দুই বছরের বেশি সময় ধরে থাকছিলেন। স্থানীয়দের দাবি, রাতে তাঁদের বাড়িতে অপরিচিত লোকের আনাগোনা ছিল, তবে তাঁরা বেশ গোপনীয় জীবনযাপন করতেন।
সম্প্রতি কলকাতার ট্যাংরায় তিনটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা শহরজুড়ে আলোড়ন তুলেছে। এরই মধ্যে আরেকটি নৃশংস হত্যার ঘটনা এলাকাবাসীকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। পুলিশ এখন হত্যার কারণ ও মরদেহ গঙ্গায় ফেলার উদ্দেশ্য খতিয়ে দেখছে।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?