কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি বৃহস্পতিবার দামেস্কে পৌঁছেছেন, যা সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের শাসন পতনের পর কোনো আরব নেতার প্রথম সফর। সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা তাকে দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাগত জানান। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-বাশির, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শিবানী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী মুরহাফ আবু কাসরাও এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার (৩০ জানুয়ারি) আরব নিউজ এক প্রতিবেদনে জানায়, ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধের সময় কাতার সিরিয়ার বিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দিয়েছিল, যার ফলে আসাদ সরকারের সঙ্গে কাতারের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে উত্তপ্ত ছিল। গত ডিসেম্বরে আসাদ মস্কোতে পালিয়ে যান, এরপর থেকেই দামেস্কে নতুন রাজনৈতিক পরিবর্তনের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল।
শেখ তামিমের এই সফর কাতার-সিরিয়া সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, কাতার সিরিয়ার পুনর্গঠনে প্রধান ভূমিকা পালন করবে, বিশেষত জ্বালানি, পরিবহন এবং আবাসন খাতে, যেগুলো গৃহযুদ্ধে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও লেখক খালেদ ওয়ালিদ মাহমুদ কাতার নিউজ এজেন্সিকে (QNA) বলেন, শেখ তামিমের এই সফর অত্যন্ত প্রতীকী এবং ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এটি সিরিয়ায় নতুন শাসনব্যবস্থার সাথে আরব বিশ্বের সংযোগ পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রথম ধাপ।
তিনি আরও বলেন, এই সফর কূটনৈতিক চ্যানেল পুনরায় চালু করতে সাহায্য করবে এবং সিরিয়ায় একটি স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানে সহায়তা করবে, যা মধ্যপ্রাচ্যে কাতারের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা আরও শক্তিশালী করবে।
আরব সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি স্টাডিজের গবেষক আহমেদ কাসিম হুসেইন বলেন, এই সফর কাতারের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা খাতে ক্রমবর্ধমান ভূমিকার ইঙ্গিত দেয়।
কাতার সিরিয়ার নতুন নেতৃত্বকে সমর্থন জানিয়ে দামেস্কে দূতাবাস পুনরায় খুলেছে, যা ২০১১ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
হুসেইন আরও জানান, দোহা সিরিয়ার রূপান্তরকালীন পর্যায়ে দিকনির্দেশনা দিচ্ছে এবং দেশটির দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করছে।
এই সফরের মাধ্যমে কাতার-সিরিয়া সম্পর্ক একটি নতুন মোড় নিতে পারে, যা মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?