সামিট ও নাবিল গ্রুপের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রায় ১৫০ কোটি টাকার লেনদেন সংক্রান্ত ২৬৪টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। দুদকের মহাপরিচালক জানিয়েছেন, শুধু দেশে নয়, বিদেশে থাকা সম্পদ ফেরানোর জন্যও কাজ চলছে।
দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, এস আলম গ্রুপের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত নাবিল গ্রুপের ৭৩টি ব্যাংক হিসাব থেকে ৯৮ কোটি টাকা জব্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি সামিট গ্রুপের ১৯১টি ব্যাংক হিসাব থেকে প্রায় ৪২ কোটি টাকা আটক করা হয়েছে।
এছাড়া, রাজশাহীতে নাবিল গ্রুপের মালিকানাধীন ৩৯টি জমির দলিলও জব্দের আদেশ পেয়েছে দুদক। সামিট গ্রুপের বিরুদ্ধেও বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে, যা তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালক জানান, দেশে থাকা সম্পদ জব্দের পাশাপাশি, বিদেশে পাচার হওয়া টাকার বিষয়ে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স (MLA) চুক্তির মাধ্যমে অর্থ ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এদিন, দুর্নীতি ও অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগে সাবেক দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমানের বিরুদ্ধেও মামলা করেছে দুদক। তার বিরুদ্ধে ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং পাঁচটি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ১২ কোটি ৬৯ লাখ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দেশে রাজনৈতিক পালাবদলের পর শেখ হাসিনার প্রশাসনের সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে গেছে দুদক। ১১টি টাস্কফোর্স গঠন করে তদন্ত জোরদার করা হয়েছে। তাদের মূল লক্ষ্য—অবৈধ সম্পদের সন্ধান করা, পাচার হওয়া অর্থ ফেরানো এবং ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্পদ স্থানান্তর রোধ করা।
বিশ্লেষকদের মতে, দুদকের এই কঠোর পদক্ষেপ ভবিষ্যতে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বড় দৃষ্টান্ত তৈরি করতে পারে। তবে কার্যকর আইনি ব্যবস্থা না নিলে পাচার হওয়া সম্পদ ফেরত আনা কঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারে।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?