ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করার সুপারিশ করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। পাশাপাশি, সর্বোচ্চ করহার ৩০% থেকে কমিয়ে ২৫% নির্ধারণ করারও প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সভাপতির সভাপতিত্বে এনবিআর ভবনে অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ এই প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।
বর্তমানে ব্যক্তি পর্যায়ে বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা এবং সর্বোচ্চ করহার ৩০%। তবে মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি বিবেচনায় রেখে করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেছে ডিসিসিআই। এছাড়াও, আয় অনুযায়ী করস্লাব পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব তুলে ধরা হয় ৫ লাখ টাকার বেশি আয়ের ক্ষেত্রে প্রথম ৩ লাখ টাকার ওপর করহার ৫% করা (বর্তমানে এক লাখ টাকার ওপর ৫% কর ধার্য রয়েছে)।
এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান প্রস্তাবের বিষয়ে বলেন, উন্নত দেশে ব্যক্তি শ্রেণির করহার ৫০-৫৫% পর্যন্ত হয়ে থাকে, যা আয়বৈষম্য কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তিনি বলেন, “আমাদেরও সেবা নিশ্চিত করতে হবে, তাহলে মানুষ হাতে কম টাকা রাখবে এবং কর প্রদানের মাধ্যমে উন্নত সুবিধা পাবে।”
২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য বাজেট প্রস্তাবনা উপস্থাপন করতে গিয়ে ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ মূসক (ভ্যাট) কাঠামো সহজ করারও প্রস্তাব দেন।
বর্তমানে স্ট্যান্ডার্ড মূসক হার ১৫%, তবে বিভিন্ন খাতে তা কমিয়ে ১০%, ৭.৫% ও ৫% করা হয়েছে। এভাবে বিভক্ত মূসক হার থাকার ফলে ব্যবসায়ীদের জন্য জটিলতা তৈরি হয়, কর প্রশাসনের দক্ষতা ব্যাহত হয় এবং বিরোধ দেখা দেয়।
ব্যবসায়ীদের প্রতিরোধের কারণে এখন পর্যন্ত একক ভ্যাট হার নির্ধারণ সম্ভব হয়নি উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “এখন ব্যবসায়ীরাই বিভক্ত ভ্যাট হারজনিত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। সবাই একমত হলে, কিছুটা কমিয়ে হলেও একক হারে যেতে হবে।” তিনি আরও জানান, এফবিসিসিআইয়ের মাধ্যমে প্রস্তাব দিলে প্রয়োজন হলে ব্যবসায়ীদের জন্য বিশেষ সফটওয়্যারও তৈরি করে দেবে এনবিআর।
ডিসিসিআইয়ের মতে, প্রস্তাবিত সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন হলে ব্যক্তি ও ব্যবসা খাতে করদাতাদের চাপ কমবে এবং রাজস্ব আহরণ আরও কার্যকর হবে।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?