আল-জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের সম্প্রতি তার ভেরিফাইড ফেসবুক পোস্টে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন। তিনি দাবি করেন, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (RAW)-এর একদল কর্মকর্তা ভিন্ন নামে ও পরিচয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
তথ্য যাচাই করে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৬ নভেম্বর, এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই ২২৭-এ RAW-এর উপদেষ্টা ও পরিচালক পর্যায়ের দুই কর্মকর্তা আশোক কুমার সিনহা ও কনজক তাশি খামপা ঢাকায় আসেন। বিমানবন্দরে ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তারা তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানান। উল্লেখ্য, এই দুই কর্মকর্তা ভারতের ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস (IPS) ক্যাডারের কর্মকর্তা। আশোক কুমার সিনহা ২০০৭ সালে এবং কনজক তাশি খামপা ২০১৩ সালে RAW-এ যোগ দেন। এর আগেও আশোক কুমার সিনহা বাংলাদেশ সফর করেছেন—৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ও ১০ নভেম্বর ২০২৩ এ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতীয় এই গোয়েন্দা কর্মকর্তারা মূলত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন ও গোয়েন্দা সহযোগিতার সুযোগ তৈরি করতে এসেছিলেন। কিন্তু এবার সফরে ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাদের স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়-নিয়মিত সম্পর্ক ছাড়া বিশেষ কোনো গোয়েন্দা সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ নেই। RAW-এর ‘কভার’ ও ‘ডিপ কভার’ অপারেটরদের নিষ্ক্রিয় করতে হবে।প্রত্যাশিত সাড়া না পাওয়ায় এই RAW কর্মকর্তারা হতাশ হন। তাদের এই অসন্তোষ গুলশান-২-এর হোটেল আমারীতে অবস্থানকালে কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারে প্রকাশ পায়। ৮ নভেম্বর ২০২৪, এই দুই কর্মকর্তা ঢাকা ত্যাগ করেন।
RAW-এর কর্মকর্তাদের বাংলাদেশ সফর বরাবরই বিতর্কিত।সংস্থাটির বিরুদ্ধে বাংলাদেশে রাজনৈতিক ও গোয়েন্দা কার্যক্রম চালিয়ে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অভিযোগ রয়েছে।অতীতে নির্বাচন ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রভাবিত করার চেষ্টা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশ সরকারের দৃঢ় অবস্থানের কারণে RAW এবার প্রত্যাশিত সুবিধা নিতে পারেনি। এই ঘটনা ভারত-বাংলাদেশ গোয়েন্দা সহযোগিতার ভবিষ্যৎ সম্পর্কেও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?