বাংলাদেশ এশিয়ার মধ্যে বাল্যবিয়েতে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে এবং বিশ্বে বাল্যবিয়ের শিকার দেশগুলোর মধ্যে অষ্টম স্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ইউনিসেফ, ইউএন উইমেন ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল প্রকাশিত ‘গার্লস গোলস: হোয়াট হ্যাজ চেঞ্জড ফর গার্লস? অ্যাডোলেসেন্ট গার্লস রাইটস ওভার ৩০ ইয়ার্স’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ২০-২৪ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে ৫১.৪ শতাংশেরই বিয়ে হয়েছে ১৮ বছর হওয়ার আগেই। এর ফলে মেয়েরা দারিদ্র্যের চক্রে আটকা পড়ে, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকে এবং তাদের সম্ভাবনার বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়, যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করে। এছাড়াও, ২০-২৪ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে ২৪ শতাংশ ১৮ বছর হওয়ার আগেই সন্তান জন্ম দিয়েছেন। ১৫-১৯ বছর বয়সী মেয়েদের মধ্যে ২৮ শতাংশ বিগত এক বছরে সঙ্গীর দ্বারা শারীরিক বা যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, “বাংলাদেশে কিশোরী মেয়েরা সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের জন্য কাজ করতে চায়। কিন্তু উচ্চ বাল্যবিয়ে হার, সহিংসতা, এবং প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা সুযোগের ঘাটতি তাদের পিছিয়ে রাখছে। এটি কেবল তাদেরই নয়, দেশের সামগ্রিক উন্নয়নেও প্রভাব ফেলছে।”
বাংলাদেশে ইউএন উইমেনের প্রতিনিধি গীতাঞ্জলি সিং বলেন, “বাল্যবিয়ের মতো ক্ষতিকর চর্চা দূর করতে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। এটি শুধুমাত্র সামাজিক ন্যায়বিচারের বিষয় নয়, বরং দেশের উন্নয়নের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।”
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর কবিতা বোস বলেন, “শিক্ষার মানোন্নয়ন, ডিজিটাল দক্ষতা বৃদ্ধি, এবং মেয়েদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত সমাজে সমান সুযোগ তৈরি না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।” প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিশ্বে যে সাতটি দেশে কিশোরী ও তরুণ নারীদের ডিজিটাল দক্ষতার হার ২ শতাংশ বা তার চেয়ে কম, বাংলাদেশ সেগুলোর মধ্যে একটি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাল্যবিয়ে রোধ এবং নারীদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে সরকার, নাগরিক সমাজ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে আরও সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?