এমবিবিএস বা বিডিএস ডিগ্রিপ্রাপ্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ নামের আগে ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না—এমন নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে, ‘ডিএমএফ’ ডিগ্রিধারীদের (ডিপ্লোমাধারী হিসেবে নিবন্ধিত) জন্য উপযুক্ত প্রিফিক্স নির্ধারণে ছয় মাসের মধ্যে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি সাথীকা হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ রায় দেন। আদালত পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেছেন, রায় ঘোষণার আগ পর্যন্ত যারা ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে রায়ের পর থেকে যদি কেউ অবৈধভাবে এই পদবি ব্যবহার করেন, তাহলে আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) আইন ২০১০ অনুযায়ী, ‘ডিএমএফ’ ডিগ্রিধারীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলে ২০১৩ সালে হাইকোর্টে রিট করেন বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন আহ্বায়ক শামসুল হুদা ও অন্যান্যরা। পরে ২০২৩ সালে বিএমডিসি আইনের ২৯ ধারা চ্যালেঞ্জ করে আরেকটি রিট করা হয়, যেখানে ধারাটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. সাইদুর রহমান, শিশির মনির ও সাদ্দাম হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ এম সাইফুল এবং বিএমডিসির পক্ষে আইনজীবী কাজী এরশাদুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ এম সাইফুল করিম জানান, রায়ের আগ পর্যন্ত ‘ডিএমএফ’ ডিগ্রিধারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে এখন থেকে তারা নামের আগে ‘ডাক্তার’ শব্দটি ব্যবহার করতে পারবেন না।
এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রিপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম ছিল ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহারের নিয়ম কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা। এ নিয়ে দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীরা কর্মবিরতিও পালন করেছেন। অন্যদিকে, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের জন্য ‘ডাক্তার’ পদবি অনুমোদনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। তবে হাইকোর্টের রায়ের পর বিষয়টি নতুন মোড় নিল।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?