clock ,

৭ অভ্যাস, যা ভালো মানুষদেরও বন্ধুত্বহীন করে তোলে

৭ অভ্যাস, যা ভালো মানুষদেরও বন্ধুত্বহীন করে তোলে

অনেক সময় আমরা মনে করি, একজন ভালো মানুষ হওয়া মানেই তার অনেক বন্ধু থাকবে। তবে বাস্তবতা হলো, অনেক সদয় সহানুভূতিশীল মানুষও গভীর এবং স্থায়ী বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে ব্যর্থ হন। তাদের কিছু অবচেতন অভ্যাস এমনভাবে কাজ করে, যা বন্ধুত্বের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এসব অভ্যাস সম্পর্কের মাঝে ফাঁক তৈরি করে, যদিও এগুলো খারাপ নয়। যদি আপনি মনে করেন, অন্যদের খুশি রাখতে গিয়ে নিজেকে একাকী অনুভব করছেন, তাহলে এই সাতটি অভ্যাসের কারণে হতে পারে।

) নিজের কষ্টের কথা শেয়ার না করা
অনেক ভালো মানুষ অন্যদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং তাদের কষ্টে সান্ত্বনা দেন। কিন্তু নিজের দুঃখ-কষ্ট অন্যদের কাছে শেয়ার করতে সংকোচ করেন। তারা মনে করেন, নিজের সমস্যাগুলো অন্যদের ওপর বোঝা চাপানো হবে। কিন্তু এতে বন্ধুত্বের গভীরতা কমে যায়, কারণ খোলামেলা আলোচনা পারস্পরিক বিশ্বাস সম্পর্কের মজবুত ভিত্তি গড়ে তোলে।

) সব সিদ্ধান্ত অন্যদের হাতে ছেড়ে দেওয়া
সদয় মানুষরা প্রায়ই নমনীয় হতে চান, তাই তারা নিজের মতামত প্রকাশ না করে অন্যদের সিদ্ধান্ত মেনে নেন। প্রথমদিকে এটি বন্ধুত্বপূর্ণ মনে হলেও, দীর্ঘমেয়াদে এটি একটি দুর্বল সংযোগ তৈরি করে। বন্ধুত্বে উভয়ের মতামত ইচ্ছার প্রকাশ অপরিহার্য।

) সাহায্য চাইতে দ্বিধাবোধ করা
অন্যদের সাহায্য করতে ভালোবাসেন, কিন্তু নিজের জন্য সাহায্য চাইতে সংকোচ করেন এমন মানুষের জন্য বন্ধুত্ব গড়া কঠিন হয়ে পড়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, অন্যদের সাহায্য চাওয়া সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি "Ben Franklin Effect" নামে পরিচিত, যা বলে, অন্যদের সাহায্য করলে তারা আপনাকে আরও পছন্দ করতে শুরু করে।

) সবসময় দ্বন্দ্ব এড়ানো
কোনো মতানৈক্য বা বিরোধ এড়ানো শান্তিপূর্ণ মনে হতে পারে, তবে এটি বন্ধুত্ব গড়তে বাধা সৃষ্টি করে। প্রকৃত বন্ধুত্বের জন্য মাঝে মাঝে খোলাখুলি মতবিনিময় এবং অনুভূতি প্রকাশ করা গুরুত্বপূর্ণ।

) বন্ধুত্বের প্রথম পদক্ষেপ না নেওয়া
অনেক সদয় মানুষ বিশ্বাস করেন, প্রকৃত বন্ধুত্ব স্বাভাবিকভাবে গড়ে ওঠে, তাই তারা অন্যদের প্রথমে যোগাযোগ করার জন্য অপেক্ষা করেন। কিন্তু আসলে বেশিরভাগ মানুষই আগ্রহ প্রকাশ পেলে সেটা পছন্দ করে।

) শুধু দেওয়া, কিন্তু কিছুই গ্রহণ না করা
সবসময় অন্যদের সাহায্য করা নিঃসন্দেহে ভালো, তবে একতরফা সম্পর্ক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। প্রকৃত বন্ধুত্বে দুজনের কাছ থেকে দেওয়া এবং গ্রহণ করা সমান গুরুত্বপূর্ণ।

) নিজের দুর্বলতা বা অসম্পূর্ণতা প্রকাশ না করা
অনেক সদয় মানুষ সবসময় নিখুঁত হতে চান এবং নিজেদের ভুল বা দুর্বলতা প্রকাশ করতে চান না। কিন্তু নিখুঁত হতে চাওয়া বন্ধুত্বের জন্য বাধা সৃষ্টি করতে পারে। মানুষ সাধারণত স্বাভাবিক বাস্তব ব্যক্তির সঙ্গে সহজে সংযোগ অনুভব করে, নিখুঁত ব্যক্তির সঙ্গে নয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়তে শুধুমাত্র সদয় হওয়া যথেষ্ট নয়, বরং খোলামেলা কথা বলা এবং নিজের বাস্তব অনুভূতিগুলো শেয়ার করাও গুরুত্বপূর্ণ। . ব্রেনে ব্রাউনের গবেষণার মতে, প্রকৃত সংযোগ আসে একে অপরের দুর্বলতা ভাগাভাগি করার মাধ্যমে।

সুতরাং, যদি আপনি সত্যিকারের বন্ধুত্ব চান, তবে শুধু সদয় হওয়া নয়, খোলামেলা কথা বলা এবং নিজের অনুভূতিগুলো শেয়ার করাও অপরিহার্য। প্রকৃত বন্ধুত্ব তখনই গড়ে ওঠে, যখন আপনি কাউকে আপনার জীবনের একটি সত্যিকারের অংশ হতে দেন।

You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?

আমাদের অনুসরণ করুন

জনপ্রিয় বিভাগ

সাম্প্রতিক মন্তব্য