লিবিয়ায় ভয়াবহ মানবপাচার ও মুক্তিপণ আদায় চক্রের মূলহোতা ফখরুদ্দীনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। গতকাল বিকাল পৌনে ৬টায় মিসরের কায়রো থেকে ঢাকায় অবতরণের পর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে আটক করা হয়। একই সময় তাকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ট্রাফিক হেলপার শওকত আলীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ফখরুদ্দীন ও তার চক্র দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশিদের লিবিয়ায় পাচার করত। পরে তাদের বন্দীশিবিরে আটকে রেখে চালানো হতো অমানবিক নির্যাতন। পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের পরও ভুক্তভোগীদের মুক্তি না দিয়ে অন্য পাচারকারী চক্রের কাছে বিক্রি করে দিত এই চক্র।
মানবপাচারের
শিকার আশিকুর রহমান সুমন (২১) বলেন, "আমাদের
অন্ধকার একটি কক্ষে আটকে
রাখা হতো। দিনে মাত্র
একবার পচা খাবার দিত।
যারা পরিবারের কাছ থেকে টাকা
আনতে ব্যর্থ হতো, তাদের লোহার
রড দিয়ে পেটানো হতো,
দেওয়া হতো বিদ্যুতের শক।"
তিনি আরও জানান, নির্যাতনের
সেই দৃশ্য সরাসরি দেখানো হতো পরিবারের সদস্যদের,
যাতে তারা ভয় পেয়ে
মুক্তিপণের টাকা পাঠায়। তবে
টাকা পাঠানোর পরও মুক্তি মিলত
না। তাদের আবার নতুন চক্রের
কাছে বিক্রি করে দিত ফখরুদ্দিন।
সুমন জানান, কায়রো বিমানবন্দরে হঠাৎ ফখরুদ্দিনকে দেখে দ্রুত তার ছবি তুলে ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছে পাঠান তিনি। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হলে, বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার করা হয় ফখরুদ্দিনকে।
মুক্তিপণের
টাকা আদায় করে ১৬
বাংলাদেশিকে লিবিয়ার বেনগাজির একটি বন্দীশিবিরে বিক্রি
করে দিয়েছে ফখরুদ্দিন। তারা এখনো বন্দী
অবস্থায় রয়েছে।
ঢাকার বিমানবন্দরে সন্তানদের মুক্তির আকুতি জানিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন ভুক্তভোগীদের
স্বজনরা। তারা বলেন, "লাখ
লাখ টাকা দিয়েও আমাদের
সন্তানদের মুক্তি পাইনি। ফখরুদ্দিন আমাদের সর্বনাশ করেছে, তার কঠোর শাস্তি
চাই!"
বর্তমানে ফখরুদ্দিন ও তার সহযোগী শওকত আলী বিমানবন্দর থানা হেফাজতে রয়েছে। চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?