ধর্ষণের শিকার আট বছরের শিশুটির অবস্থা আরও অবনতি হয়েছে। তিন দিনেও তার জ্ঞান ফেরেনি, বর্তমানে কৃত্রিম যন্ত্রের সাহায্যে শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে। সংকটাপন্ন অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়েছে। এদিকে, ঘটনার তিন দিন পর ভুক্তভোগীর মা মাগুরা সদর থানায় চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। পুলিশ তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করেছে। আসামিরা হলেন—শিশুটির ভগ্নিপতি সজিব শেখ, তার ভাই রাতুল শেখ, বাবা হিটু শেখ এবং মা জাবেদা বেগম।
শিশুটি গত বুধবার রাতে মাগুরার নিজনান্দুয়ালী গ্রামে তার বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়। অভিযোগে বলা হয়েছে, শিশুটিকে ধর্ষণ করেছে তার বোনের শ্বশুর হিটু শেখ। পরদিন সকালে অচেতন অবস্থায় তাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হয়ে ঢামেক হাসপাতালে আনা হয়। ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানান, শিশুটির যৌনাঙ্গে গুরুতর ক্ষতচিহ্ন রয়েছে এবং তার গলায়ও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। চিকিৎসায় চারটি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তাদের পরামর্শেই শিশুটিকে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়।
মাগুরা সদর থানার ওসি আইয়ুব আলী জানান, গ্রেপ্তার হওয়া চারজনকে আদালতে হাজির করা হয়েছে এবং তাদের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে।
শিশুটির মা মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, তার বড় মেয়ের স্বামীর সহায়তায় তার শ্বশুর হিটু শেখ শিশুটিকে ধর্ষণ করেছে। ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে হিটুর স্ত্রী ও ছেলে শিশুটিকে হত্যার চেষ্টা করে। এজাহারে আরও বলা হয়, চার মাস আগে বড় মেয়ের সঙ্গে সজিবের বিয়ে হয়। এরপর থেকেই সজিবের বাবা হিটু শেখ তার পুত্রবধূকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। পরিবারের সবাই জানলেও কেউ প্রতিবাদ করেনি।
ঢামেক হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে গিয়ে সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "একটি আট বছরের শিশুর গায়ে হাত দেয় কেমন কাপুরুষ? দোষীদের যেন কোনোভাবেই ছাড় না দেওয়া হয়। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।" শিশুটির মা বর্তমানে অসুস্থ হয়ে ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় অবস্থান করছেন।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?