ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাঠানো আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। শনিবার তেহরানে এক ভাষণে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কেবল ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নয়, বরং দেশটির প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপরও শর্ত চাপিয়ে দিতে চায়।
এর আগে, শুক্রবার ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্ককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার জন্য তিনি খামেনিকে চিঠি পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, আপনি আলোচনায় বসবেন, কারণ এটি ইরানের জন্য ভালো হবে।’ তবে তিনি সতর্ক করেন যে, আলোচনা না হলে যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারে।
তেহরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে আলোচনার কোনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পায়নি। এরপরও ইরানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে খামেনি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘তাদের লক্ষ্য আলোচনার মাধ্যমে সমাধান নয়, বরং নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করা। ইরান কোনোভাবেই তাদের শর্ত মেনে নেবে না।’ এর আগেও, ফেব্রুয়ারি মাসে খামেনি বলেছিলেন, ইতিহাস সাক্ষী যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসলে তা ইরানের জন্য সুফল বয়ে আনবে না।
দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে ট্রাম্প তেহরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি অব্যাহত রেখেছেন। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র ইরানের প্রধান রফতানি খাত, বিশেষ করে তেলের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যার উদ্দেশ্য দেশটিকে অর্থনৈতিকভাবে আরও চাপে ফেলা।
এদিকে, জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসি সতর্ক করেছেন, ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত করার জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টার সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, তেহরান দ্রুত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাচ্ছে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও গাজার চলমান যুদ্ধের ফলে ইরান তার সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে বলে পর্যবেক্ষক সংস্থাটি জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল পরিষ্কারভাবে জানিয়েছে, তারা ইরানকে পরমাণু অস্ত্রের সক্ষমতা আরও বাড়াতে দেবে না। এতে মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?