মুসলিম নিষেধাজ্ঞার পথে আরও এক ধাপ এগোলো যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন এক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যা মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর ভ্রমণকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার পথ আরও সুগম করেছে। নতুন আদেশে বলা হয়েছে, যারা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব, সংস্কৃতি, সরকার বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শত্রুতাপূর্ণ মনোভাব পোষণ করে, তাদের ভিসা বা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে।

ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের টার্গেট
নতুন নিয়মে, বিশেষত ফিলিস্তিনের পক্ষে সোচ্চার থাকা বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপরও নিষেধাজ্ঞার সুযোগ তৈরি হয়েছে। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, ফিলিস্তিন ইস্যুতে মুসলিমদের সমর্থন বেশি থাকায় এটি কার্যত ‘মুসলিম ব্যান’ হিসেবে কাজ করবে।

আইআরএপি-র আইনজীবী দীপা আলগেসান বলেন, "২০১৭ সালে ট্রাম্প প্রথম মুসলিম-প্রধান দেশের নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন। নতুন আদেশটি আরও ব্যাপক এবং বৈষম্যমূলক। এটি কেবল বাইরে থেকে আসা মানুষের ওপর নয়, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকারী ব্যক্তিদেরও টার্গেট করবে।"

৬০ দিনের সময়সীমা ও গোয়েন্দা কার্যক্রম
নির্বাহী আদেশ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে ৬০ দিনের মধ্যে এমন দেশগুলো চিহ্নিত করতে হবে, যাদের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া ‘ত্রুটিপূর্ণ’। এরপর এসব দেশের নাগরিকদের ভ্রমণে আংশিক বা পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

আরব বংশোদ্ভূতদের সংগঠনগুলোর প্রতিবাদ
আমেরিকান-আরব অ্যান্টি-ডিসক্রিমিনেশন কমিটি (এডিসি) বলেছে, এই আদেশটি আদর্শগত এবং সাংস্কৃতিক পার্থক্যের অজুহাতে বৈষম্যের সুযোগ দেবে। এতে নির্দোষ মানুষও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এডিসি এক বিবৃতিতে বলেছে, "এই আদেশ মুক্ত মত প্রকাশের পরিপন্থী। এটি মার্কিন মূল্যবোধের বিপরীত এবং সামাজিক বিভেদকে আরও বাড়িয়ে দেবে।"

২০২৪ সালের নির্বাচনি প্রচারণায় ট্রাম্পের বক্তব্য
২০২৪ সালের প্রচারণার সময় ট্রাম্প বলেছিলেন, ফিলিস্তিন, গাজা, লিবিয়া, সোমালিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেনের মতো দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করবেন। তিনি সাম্যবাদী ও সমাজতান্ত্রিকদের প্রবেশও নিষিদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, এই আদেশ বিভাজন তৈরি করবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী সম্প্রদায়ের জন্য আরও অনিশ্চয়তা ও আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করবে।