clock ,

মাদারীপুরে মসজিদে তিন খুনের ঘটনায় এলাকা পুরুষ শূন্য, চলছে তদন্ত

মাদারীপুরে মসজিদে তিন খুনের ঘটনায় এলাকা পুরুষ শূন্য, চলছে তদন্ত

বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলার সদর উপজেলায় এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে আপন দুই ভাইসহ তিনজনকে মসজিদের ভেতরে কুপিয়ে হত্যা করার পর পুরো এলাকা থমথমে হয়ে উঠেছে। এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে এবং সামাজিক মাধ্যমেও চলছে আলোচনা-সমালোচনা।


ঘটনার পর থেকে পুরো এলাকা পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন ঘটনাস্থলে যাওয়া সাংবাদিকরা। গ্রেফতার আতঙ্কে স্থানীয় পুরুষরা গা ঢাকা দিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং তদন্ত পরিচালনার জন্য সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে এবং নিহত দুই ভাইয়ের মা সুফিয়া বেগমের করা মামলায় ৫৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া, অজ্ঞাতনামা আরও ৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

পুলিশ স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। বিশেষ করে, সাম্প্রতিক সময়ে বালু উত্তোলন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করেছিল।


শনিবার বেলা এগারোটার দিকে সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের সরদার বাড়ির সামনের মসজিদে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রথমে সাইফুল সরদারকে একা পেয়ে প্রতিপক্ষ হামলা চালায়। পরে তার ভাই আতাউর রহমান সরদার চাচাতো ভাই পলাশ সরদার তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে তারাও হামলার শিকার হন। একপর্যায়ে, বাঁচার জন্য তারা মসজিদে আশ্রয় নিলে সেখানেই তাদের কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহতরা হলেন আতাউর রহমান সরদার, সাইফুল ইসলাম সরদার (ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা) এবং পলাশ সরদার (চাচাতো ভাই)

পুলিশের দাবি, সাইফুল ইসলাম স্থানীয় বাজারের ইজারা বালুর ব্যবসায় আধিপত্য বিস্তার করছিলেন। সম্প্রতি রাজনৈতিক পালাবদলের পর প্রতিপক্ষ শাজাহান মোল্লা তার অনুসারীরা এসব ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইলে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে।

সুফিয়া বেগমের করা মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে শাজাহান মোল্লাকে, যিনি স্থানীয় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।

হামলার সময় এবং তার পরবর্তী সময়ে নিহতদের বসতবাড়িতে হামলা, ভাংচুর লুটপাট হয়। অন্তত তিনটি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়, এবং এতে আরও কয়েকজন আহত হন। পুলিশের মতে, এর আগেও দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল, যা এই হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে শাজাহান মোল্লা বা তার পরিবারের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি, কারণ তারা এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছেন।

সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে এখনো পুলিশ মোতায়েন রয়েছে, এবং নিহতদের বাড়ির নারীরা কান্নাকাটি করছেন। পুলিশ বলছে, মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।এখন পর্যন্ত তদন্ত চলছে এবং এই হত্যাকাণ্ডের পেছনের প্রকৃত কারণ উদঘাটনে প্রশাসন কাজ করছে।

 

You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?

সম্পর্কিত খবর

আমাদের অনুসরণ করুন

জনপ্রিয় বিভাগ

সাম্প্রতিক মন্তব্য