ভারতসহ একাধিক দেশে আবারও বাড়তে শুরু করেছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। গত মে মাসের শেষদিক থেকে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা হঠাৎ করেই বাড়তে শুরু করে, যা এখন উদ্বেগজনক হারে ছড়িয়ে পড়ছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ৩১ মে পর্যন্ত ভারতে সক্রিয় কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ৩ হাজার ৩৯৫ জনে পৌঁছেছে, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় প্রায় ১,২০০ শতাংশ বেশি।
ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৫৭ থেকে বেড়ে হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ২২ মে ভারতে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ছিল মাত্র ২৫৭, ২৬ মে তা দাঁড়ায় ১ হাজার ১০ জন, আর এক সপ্তাহ পর তা পৌঁছে ৩ হাজার ৩৯৫-এ। শনিবার সকাল পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, একদিনে নতুন করে ৬৮৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং মৃত্যু হয়েছে চারজনের।
ভারতের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলে সংক্রমণের হার তুলনামূলক বেশি। কেরালায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত—এখানে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৩৩৬। মহারাষ্ট্রে ৪৬৭, দিল্লিতে ৩৭৫, গুজরাটে ২৬৫, কর্ণাটকে ২৩৪, পশ্চিমবঙ্গে ২০৫, তামিলনাড়ুতে ১৮৫ এবং উত্তরপ্রদেশে ১১৭ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। অন্যদিকে, রাজস্থান, পুদুচেরি, হরিয়ানা, অন্ধ্রপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সক্রিয় রোগী রয়েছে।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ (ICMR) জানিয়েছে, সাম্প্রতিক আক্রান্তদের নমুনা বিশ্লেষণে ওমিক্রনের নতুন সাবভেরিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে, যা এই সংক্রমণ বৃদ্ধির মূল কারণ। সংস্থার প্রধান ড. রাজীব বেহেল জানিয়েছেন, “দক্ষিণ ভারতে প্রথম সংক্রমণ বাড়ে, পরে তা পশ্চিমে ছড়িয়ে পড়ে এবং বর্তমানে উত্তর ভারতেও ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, ভারতে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন সাড়ে ৪ কোটি মানুষ এবং মৃত্যু হয়েছে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ টিকাদান কর্মসূচির আওতায় দেশটির ৭২ কোটিরও বেশি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশেও সাম্প্রতিক সময়ে করোনার সংক্রমণ হার বাড়ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এই প্রেক্ষাপটে জনসাধারণকে জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় মাস্ক পরার অনুরোধ জানানো হয়েছে। বিশেষ করে বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য সতর্কতা জারি করে ভিড় এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস এখন আর আগের মতো ব্যাপক মৃত্যু ঘটাচ্ছে না বটে, তবে এর নতুন ভেরিয়েন্টগুলো দ্রুত ছড়াতে পারে এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্নদের জন্য গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?