বিমানসেবিকাকে যৌন হয়রানি; ভারতীয় নাগরিকের কারাদন্ড

সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের (এসআইএ) একটি ফ্লাইটে বিমানসেবিকাকে যৌন হয়রানি করার অপরাধে ২০ বছর বয়সী এক ভারতীয় নাগরিককে তিন সপ্তাহের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। গত ১৪ মে, রজত নামের ওই ব্যক্তি (যার আর কোনো নাম নেই), যৌন হেনস্তার উদ্দেশ্যে জোর প্রয়োগের অভিযোগে দোষ স্বীকার করেন।

ঘটনাটি ঘটে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি। অস্ট্রেলিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত রজত পার্থ থেকে সিঙ্গাপুরগামী ফ্লাইটে ছিলেন। সকাল ১১টা ২০ মিনিটে এক বিমানবালা ফ্লাইটের একটি টয়লেট পরিষ্কার করছিলেন এবং মেঝেতে পড়ে থাকা একটি টয়লেট পেপার তুলতে নিচু হন। ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর ইউজিন লাউ বলেন, এই সময় রজত তার কাছে আসে এবং উভয় হাত দিয়ে তার নিতম্বের কাছাকাছি হিপে স্পর্শ করে। এরপর জোরপূর্বক টয়লেটে ঢুকে পড়ে, যার ফলে ভুক্তভোগীও বাধ্য হয়ে টয়লেটের ভেতরে ঢুকে পড়েন। ঘটনাটি দেখে এক নারী যাত্রী দ্রুত বিমানসেবিকাকে টয়লেট থেকে টেনে বের করেন এবং ফ্লাইটের পেছনের দিকে নিয়ে যান যাতে তিনি নিজেকে সামলে নিতে পারেন এবং রজত থেকে দূরে থাকতে পারেন। এরপরও রজত ওই বিমানবালার সঙ্গে একান্তে কথা বলার অনুরোধ জানায় বলে জানান প্রসিকিউটর। চাঙ্গি বিমানবন্দরে বিমানটি অবতরণের পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর লাউ তিন থেকে ছয় সপ্তাহের কারাদণ্ডের আবেদন করেন। তিনি বলেন, বিমানসেবিকাটি মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন এবং রজতের আচরণে তিনি আতঙ্কিত, ঘৃণিত ও অপমানিত বোধ করেছেন। প্রসিকিউটর আরও বলেন, বিমানযাত্রার মতো চাপপূর্ণ পরিবেশে, যেখানে বোর্ডারদের কাছাকাছি অবস্থানে থাকতে হয় এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তা পাওয়া যায় না, সেখানে এই ধরনের অপরাধ গুরুত্বসহকারে দেখা উচিত।

অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী রঞ্জিত সিং আদালতকে জানান, রজতের কোনো পূর্ব অপরাধের রেকর্ড নেই এবং সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো আচরণ করেছে। জরিমানা যথেষ্ট হওয়ার কথা, তবে আদালত যদি তা না মেনে নেয়, তবে আমি এক সপ্তাহের সংক্ষিপ্ত কারাদণ্ডের অনুরোধ করছি।

সিঙ্গাপুরের আইনে যৌন হয়রানির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, জরিমানা, বেত্রাঘাত অথবা উভয় দন্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। এনডিটিভি, দ্য স্ট্রেইটস টাইমস