আজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আগত ১৫ লাখেরও বেশি মুসলমান ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত করে তুলেছেন মক্কার উপকণ্ঠে অবস্থিত ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দান।
তালবিয়া পাঠের মধ্য দিয়েই শুরু হয় হজের আনুষ্ঠানিকতা। এই উচ্চারণ ইসলামের মূলভিত্তি—তাওহিদের জীবন্ত চর্চা, যা হাজিদের অন্তর থেকে উদ্গত হয় পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণের প্রতীক হিসেবে। “লাব্বাইক, হে আল্লাহ! আমি হাজির, আমি আপনার ডাকে সাড়া দিতে এসেছি”—এই ঘোষণাই যেন গোটা মানবজাতির পক্ষ থেকে সৃষ্টিকর্তার প্রতি আনুগত্যের প্রতিজ্ঞা।
হাজিরা আজ সকালে মিনায় অবস্থান শেষে ফজরের নামাজ আদায় করে রওনা হন আরাফাতে। ইসলামে এই দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এটি হজের মূল স্তম্ভ বলে বিবেচিত। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত হাজিরা আরাফাতে অবস্থান করে দোয়া, জিকির, কোরআন তিলাওয়াত এবং আত্মসমীক্ষায় মগ্ন থাকেন।
সূর্যাস্তের পর আরাফাত থেকে তারা সরাসরি যাবেন মুজদালিফায়, যেখানে রাত কাটিয়ে পরদিন মিনায় ফিরে শয়তানকে প্রতীকী পাথর নিক্ষেপ করবেন। সেই সঙ্গে আদায় করবেন পশু কোরবানির সুন্নত, যা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন।
সৌদি গেজেট ও এএফপির তথ্য অনুযায়ী, হজ ব্যবস্থাপনায় এবার বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তা ও প্রযুক্তিনির্ভর পর্যবেক্ষণে। গোটা মক্কা নগরী ও পবিত্র স্থানগুলোকে মুড়ে ফেলা হয়েছে ১৫ হাজারের বেশি নজরদারি ক্যামেরায়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে চলছে নিরাপত্তা ও ভিড় নিয়ন্ত্রণ।
অন্যদিকে, হাজিদের সুবিধার্থে মিনায় স্থাপন করা হয়েছে শত শত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, অগ্নিনির্বাপক সজ্জিত তাঁবু। ৮ হাজারের বেশি বাস হাজিদের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিরাপদে পরিবহনে নিয়োজিত রয়েছে।
হজ চলাকালে ধর্মীয় প্রশ্নের জবাব দিতে সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আব্দুল আজিজ আল-শেখ দায়িত্ব দিয়েছেন পাঁচজন বিশিষ্ট আলেমকে। বুধবার তাঁর বাসভবনে তিনি সরাসরি ফতোয়া প্রার্থীদের গ্রহণ করেন এবং ইসলামী বিধান নিয়ে হাজিদের নানা জিজ্ঞাসার জবাব দেন।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?