দেড় হাজার ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণের ঘোষণা

দেশের ১ হাজার ৫১৯টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাকে পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণ করার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) এ সিদ্ধান্তের কথা জানান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ) এসএম মাসুদুল হক।

মাদ্রাসা জাতীয়করণসহ ছয় দফা দাবিতে গত ১৯ জানুয়ারি থেকে টানা কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরা। এর অংশ হিসেবে রোববার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে পদযাত্রা করলে পুলিশ তাদের টিয়ার শেল ও লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সোমবার সরকারের কাছে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েও কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় মঙ্গলবার দশম দিনের মতো আন্দোলন অব্যাহত রাখেন শিক্ষকরা।

অবশেষে বেলা ১টার দিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষকদের প্রতিনিধি দলকে ডাকা হয় এবং বৈঠকের পর তাদের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়। শাহবাগে অবস্থানরত শিক্ষকদের সামনে জাতীয়করণের ঘোষণা দেন যুগ্ম সচিব এসএম মাসুদুল হক। তিনি বলেন,
"আপনাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাকে পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণ করা হবে। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা একাডেমিক স্বীকৃতি জুনের মধ্যে পুনরায় চালু করা হবে। প্রাথমিকভাবে ১ হাজার ৫১৯টি স্বতন্ত্র মাদ্রাসাকে এমপিওভুক্ত করা হবে এবং পরবর্তীতে আরও মাদ্রাসা অন্তর্ভুক্ত করা হবে।"

সরকারের এ সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা। শাহবাগে আনন্দ মিছিল করেন তারা, কেউ কেউ আনন্দে কেঁদে ফেলেন। আন্দোলনের আহ্বায়ক মোখলেছুর রহমান বলেন,
"দীর্ঘদিন ধরে আমরা আমাদের দাবি তুলে ধরেছি। আজ সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে দাবির যৌক্তিকতা স্বীকার করা হয়েছে এবং পূরণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। এখন দ্রুত বাস্তবায়ন চাই।"

সরকারি হিসাবে, দেশে বর্তমানে ১ হাজার ৫১৯টি সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা রয়েছে। এসব মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকের বেতন মাত্র ৫ হাজার এবং সহকারী শিক্ষকের বেতন ৩ হাজার টাকা। এছাড়া ৫ হাজার ৯৩২টি মাদ্রাসা সরকারি অনুদানবিহীন অবস্থায় পরিচালিত হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে এসব মাদ্রাসাও জাতীয়করণের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।