যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ডের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করেছে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও উগ্রপন্থা নিয়ে গ্যাবার্ডের বক্তব্যের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সরকার।
সোমবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, "ডিএনআই তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্য আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি। তার বক্তব্যে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর ‘নিপীড়ন ও হত্যা’ এবং দেশে ‘ইসলামি সন্ত্রাসীদের হুমকি’ বিদ্যমান বলে দাবি করা হয়েছে। এমনকি বাংলাদেশকে ‘একটি ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠার চেষ্টার অংশ’ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন।"
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সব ধর্মের মানুষের সহাবস্থানের দেশ এবং এর ঐতিহ্যগত ইসলামিক চর্চা সর্বদাই অন্তর্ভুক্তিমূলক ও শান্তিপূর্ণ। উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। এ ধরনের মন্তব্য দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।
অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, গ্যাবার্ডের মন্তব্যের পেছনে কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ নেই। বিবৃতিতে বলা হয়, "বাংলাদেশও বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো চরমপন্থার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। তবে আইন প্রয়োগ, সামাজিক সংস্কার ও অন্যান্য কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় সন্ত্রাসবাদবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করে চলেছি।"
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশকে "ইসলামি খেলাফত" ধারণার সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা শুধু দেশটির চিত্র বিকৃত করে না, বরং যারা বিশ্বব্যাপী শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের জন্য কাজ করছে, তাদের প্রচেষ্টাকেও অবমূল্যায়ন করে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার স্পষ্টভাবে জানায়, "আমরা যে কোনো ধরনের ‘ইসলামি খেলাফত’ প্রতিষ্ঠার অভিযোগের তীব্র নিন্দা জানাই এবং এটিকে একটি সার্বভৌম জাতির বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা বলে মনে করি।"
বাংলাদেশের সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, রাজনৈতিক নেতাদের তাদের বক্তব্যের আগে বাস্তব তথ্য যাচাই করা উচিত এবং এমন বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত, যা ভয় বা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, "চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সম্মিলিত বৈশ্বিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে, বাংলাদেশ সবসময় তথ্যভিত্তিক ও গঠনমূলক সংলাপে অংশ নিতে প্রস্তুত, যেখানে সকল জাতির সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার প্রতি শ্রদ্ধা থাকবে।"
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?