clock ,

এপ্রিলে ভোটই সঠিক সময়: লন্ডনে চ্যাথাম হাউজে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

এপ্রিলে ভোটই সঠিক সময়: লন্ডনে চ্যাথাম হাউজে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা . মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী এপ্রিলেই দেশের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের সময় সঠিক। তিনি বলেন, ১৭ বছর পর জনগণ একটি সত্যিকারের নির্বাচন পেতে যাচ্ছে, যা পুরনো বাংলাদেশকে বিদায় জানিয়ে নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।

বুধবার (১১ জুন) লন্ডনের প্রভাবশালী গবেষণা প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউজ আয়োজিত এক সংলাপে প্রধান বক্তা হিসেবে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সংলাপটি সঞ্চালনা করেন চ্যাথাম হাউজের পরিচালক ব্রনওয়ে ম্যাডক্স। সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক, সাংবাদিক গবেষকরা।

. ইউনূস বলেন, “নির্বাচনের জন্য এপ্রিলে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত যথাযথ। জনগণ প্রস্তুত। এটা হবে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সুন্দর নির্বাচন। এটি কেবল একটি নিয়মিত নির্বাচনী প্রক্রিয়া নয়, বরং নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য একটি গণভোট।” তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের সময় তাদের তিনটি মূল দায়িত্ব নির্ধারণ করা হয়েছিল প্রয়োজনীয় গণতান্ত্রিক সংস্কার বাস্তবায়ন, জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতদের বিচার নিশ্চিত করা এবংএকটি স্বচ্ছ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা।

নির্বাচন নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলমান বিতর্ক প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে . ইউনূস বলেন, “যে প্রজন্ম গত ১৭ বছরে ভোট দেয়ার সুযোগ পায়নি, এবার তারাই প্রথমবার ভোট দিতে যাচ্ছে। তরুণদের এই উত্তেজনা অংশগ্রহণ নতুন বাংলাদেশ গড়ার চালিকাশক্তি হয়ে উঠবে।

তিনি জানান, চলতি মাসেই দেশের সামনেজুলাই সনদউপস্থাপন করা হবে, যা হবে নতুন বাংলাদেশের রূপরেখা। প্রতিটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে। কমিশনগুলোর সুপারিশের ভিত্তিতে দলগুলোর মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলা হবে।

সাবেক ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্নে . ইউনূস বলেন, “আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করিনি। বরং দেশের নিরাপত্তা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে তাদের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।

ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “বিচার প্রক্রিয়া কেন নির্বাচনের পরবর্তী সরকারের জন্য রাখা হলো না, প্রশ্ন আমাদের নয়। আমরা যে দায়িত্ব নিয়েছি, তা একটি পরিষ্কার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গ্রহণ করেছি। আমাদের কেবল তিনটি দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল, আমরা সেটিই করছি।

অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো সদস্য নির্বাচনের পরে ক্ষমতায় থাকতে চান কি নাএমন প্রশ্নের জবাবে . ইউনূস সাফ জানিয়ে দেন, “একেবারেই না। আমরা কেউ- নির্বাচনের পর সরকারের অংশ হতে চাই না। আমাদের লক্ষ্য হলো শান্তিপূর্ণভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করা।

তিনি বলেন, “যখন আমরা নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেব, তখন জনগণ যেন সন্তুষ্ট থাকে, সেটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ বিশ্বাসযোগ্য করতে আমরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

সংলাপে . ইউনূস আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “দেনায় জর্জরিত এক অর্থনীতির দায়িত্ব আমরা নিয়েছি। একটি শ্বেতপত্র অনুসারে, সাবেক সরকারের আমলে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শূন্য ছিল, ব্যাংকিং খাত ছিল ধ্বংসপ্রাপ্ত।

তবে বর্তমানে দেশের অর্থনীতির পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো উল্লেখ করে তিনি বলেন, “প্রবাসী রেমিট্যান্স বেড়েছে, এবং দেশের পেমেন্ট ব্যালান্স এখন ইতিবাচক।

. ইউনূস জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের সময় বিভিন্ন সরকারি সেবা ডিজিটাল মাধ্যমে সরবরাহ শুরু হয়েছে, যাতেমাধ্যমবা ঘুষের প্রয়োজন না পড়ে। উদ্যোগ দুর্নীতি কমাতে সহায়ক হয়েছে।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন কর্মসূচিতে অর্থায়ন বন্ধ করেছে, ফলে রোহিঙ্গাদের ভরণপোষণে চাপ তৈরি হয়েছে। সরকার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।

 

You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?

আমাদের অনুসরণ করুন

জনপ্রিয় বিভাগ

সাম্প্রতিক মন্তব্য