অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস মন্তব্য করেছেন যে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিচারের মুখোমুখি হতে হবে, তা তিনি দেশে থাকুন বা না থাকুন। ইউনূস বলেন, “বিচার অবশ্যই হবে। শুধু শেখ হাসিনা নয়, তার সঙ্গে যারা জড়িত, তার পরিবার, সহযোগী ও ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরাও বিচারের আওতায় আসবে।”
২০১৫ সালের ৫ আগস্ট জনবিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে তিনি সেখানে অবস্থান করছেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রতি সরকারের দমন-পীড়নকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে বিবেচনা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম শুরু করেছে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গোপন বন্দিশিবির পরিচালনার অভিযোগও উঠেছে, যেখানে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের নামে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে আটক, গুম ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে। হত্যার এবং গুমের দুই মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। ভারতকে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠানো হলেও দিল্লি এখনও তার বিষয়ে কোনো উত্তর দেয়নি।
ইউনূস বলেন, “এটা এমন একটি ভয়ঙ্কর ঘটনা যা কল্পনাও করা যায় না। সেখানে যা দেখেছি, তাতে আমি শিউরে উঠেছি।” তিনি আরও জানান, “শেখ হাসিনাকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে, তা সে বাংলাদেশে থাকুক বা না থাকুক, বিচার চলবে।”
তিনি বলেন, “এই অপরাধের সাথে পুরো সরকার জড়িত ছিল, তাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে কারা নিজেদের আগ্রহে, সরকারের আদেশে, কিংবা বাধ্য হয়ে এসব করেছে।”
ইউনূসের ভাষায়, “এখনো পর্যন্ত তদন্ত চলছে, কিছু অপরাধী বিচার পাবে, কিছু বিচারের প্রক্রিয়ায় রয়েছে, আর কিছু হয়ত ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাবে।”
শেখ হাসিনার আমলের দুর্নীতির তদন্তও চলছে। দুর্নীতি দমন কমিশন ইতোমধ্যে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে, যার মধ্যে তার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের নামও রয়েছে। ইউনূস বলেছেন, “টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুতর, তার বিপুল সম্পদ খতিয়ে দেখা হবে।”
লন্ডনে টিউলিপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু বাড়ি পাওয়া গেছে, যেগুলো শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠদের কাছ থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া বলে অভিযোগ রয়েছে। টিউলিপের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তার মুখপাত্র, তবে দুদক এখনো তাকে যোগাযোগ করেনি।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?