নামসর্বস্ব ও ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ১১০২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমসহ ৬৮ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (১৯ মে) ঢাকার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা দুটি দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. তানজির হোসেন।
প্রথম
মামলায় ‘মেসার্স হুদা এন্টারপ্রাইজ’ নামে
অস্তিত্বহীন একটি প্রতিষ্ঠানের নামে
ভুয়া বিনিয়োগ প্রস্তাব ও জাল কাগজপত্রের
ভিত্তিতে ৫৫৩ কোটি ২১
লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
আনা হয়েছে।
এই মামলার প্রধান আসামি মোহাম্মদ সাইফুল আলম। এছাড়া ব্যাংকের
সাবেক ও বর্তমান ব্যবস্থাপনা
পরিচালক, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক,
শাখা ব্যবস্থাপকসহ মোট ৩১ জন
কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারে
বলা হয়, বিনিয়োগ প্রস্তাবে
কোনো বৈধ CIB রিপোর্ট, ট্রেড লাইসেন্স, বীমা পলিসি, আইনগত
ছাড়পত্র বা সম্পদের প্রকৃত
মূল্যায়ন ছাড়াই ঋণ অনুমোদন করা
হয়। পরে এসব টাকা
ভুয়া প্রতিষ্ঠান যেমন ভেনাস ট্রেডিংস,
রিজেনেবল ট্রেডার্স, আব্দুল আওয়াল অ্যান্ড সন্স-এর মাধ্যমে
সরিয়ে ফেলে এস আলম
গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠানে ১৩০
কোটি টাকা হস্তান্তর করা
হয়। দ্বিতীয়
মামলায় ২০১২ সালে গঠিত
ভুয়া প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স সাফরান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল’-এর নামে ৫৪৯
কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
আনা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে ১৫২ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করা হয়। এরপর কোনো অর্থ পরিশোধ ছাড়াই পরবর্তী বছরগুলোতে তথ্য জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণের সীমা বাড়িয়ে সর্বশেষ ২০২৩ সালে তা ৫৪৮ কোটি ৮০ লাখ টাকায় পৌঁছায়।
এসব অর্থ বিভিন্ন নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঘুরিয়ে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করা হয়। তদন্তে অর্থ পাচারের সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়ার দাবি করেছে দুদক।
দুই মামলাতেই আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯ (বিশ্বাসভঙ্গ করে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ), ৪২০ (প্রতারণা), ৪৬৭-৪৭১ (জালিয়াতি), দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলম উভয় মামলারই প্রধান আসামি। তার বিরুদ্ধে আগেও ব্যাংক খাতের অতিরিক্ত ঋণ, নিয়ন্ত্রণমূলক সুবিধা ও ব্যাংক মালিকানা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এবারের মামলাগুলো সেই বিতর্কের আইনগত পরিণতি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?