ডিএইচএস কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিউ জার্সির নিউয়ার্কে অবস্থিত ডেলানি হল ইসিই আটক কেন্দ্র থেকে চারজন অভিবাসী পালিয়ে গেছেন। আটক কেন্দ্রের ভেতরে একটি বিশৃঙ্খলার সুযোগে সেখান থেকে পালিয়ে যান তারা। পালিয়ে যাওয়া এসব অভিবাসী বেশকয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার আসামি ছিলেন। পুরো এ ঘটনার তদন্তে নেমেছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ ( ডিএইচএস)। হোমল্যান্ড সিকিউরিটির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ফক্স নিউজকে নিশ্চিত করেছেন এই তথ্য। তিনি আরও জানান, পলাতকদের খুঁজে বের করার জন্য অতিরিক্ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে জরুরি তলব করা হয়েছে। শুক্রবার, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (ডিএইচএস) এবং এফবিআই তাদের খুজে পেতে নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি দেন এবং তথ্য প্রদানকারীকে ১০ হাজার ডলার পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেন।
ইমিগ্রেশন অ্যাটর্নি মুস্তাফা সেটিন বলেন যে, খাবার দিতে দেরি হওয়া নিয়ে উত্তেজিত হয়ে প্রায় ৫০ জন বন্দী ডরমিটরির দেয়াল ধাক্কা দিয়ে ভেঙে ফেলেন। আর কিছু বন্দী আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তিনি আরও বলেন যে তার মক্কেল জানিয়েছেন যে দেয়ালটি “খুব শক্তিশালী ছিল না” এবং বন্দীরা বিছানার চাদর ঝুলিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল। ঘটনার সময় গ্যাসের গন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল।
পরে সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ এসেক্স কাউন্টি শেরিফের অফিস এবং নিউয়ার্ক পুলিশের কয়েক ডজন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দেখতে পান সেখানে এক ধরনের গ্যাস ছড়িয়ে পড়ছে যার জন্য সবার কাশি হচ্ছে।
রাত আনুমানিক ৯টার দিকে, একদল বিক্ষোভকারী ডেলানি হলের একটি গেট থেকে বেরিয়ে আসা একটি এসইউভিকে আটকে দেয়, যার ফলে গাড়িটি আবার ভেতরে ফিরে যেতে বাধ্য হয়। পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের টার্নপাইক ৭৮ এবং ডেলান্সি স্ট্রিটের কাছে দৌড়াতে দেখা গেছে।
পলাতক অভিবাসীরা হলেন, ফ্র্যাঙ্কলিন নরবার্তো বাউটিস্তা-রেয়েস, জোয়েল এনরিক স্যান্ডোভাল-লোপেজ, জোয়ান সেবাস্তিয়ান কাস্তানেদা-লোজাদা এবং আন্দ্রেস পিনেদা-মোগোলন।
ডিএইচএস কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে, হন্ডুরাসের নাগরিক বাউটিস্টা-রেইস ২০২১ সালে বাইডেন প্রশাসনের সময় অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন। চলতি বছরের ৩ মে, নিউজার্সির ওয়েইন টাউনশিপ পুলিশ বিভাগ তাকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে গুরুতর হামলা, শরীরিক ক্ষতি করার চেষ্টা, সন্ত্রাসী হুমকি এবং অবৈধ উদ্দেশ্যে অস্ত্র রাখার অভিযোগ আনা হয়।
হন্ডুরাসের সানডোভাল-লোপেজ ২০১৯ সালে অপ্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন। ২০২৪ সালের অক্টোবরে হ্যান্ডগান রাখার অভিযোগে ও ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে গুরুতর হামলার অভিযোগে তাকে দু’বার গ্রেপ্তার করা হয়।
এছাড়া কলম্বিয়ার কাস্তানেদা-লোসাদা ২০২২ সালে বাইডেন প্রশাসনের সময় অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন। ২০২৫ সালের ১৫ মে নিউ জার্সির হ্যামন্টন পুলিশ তাকে চুরি, ডাকাতি ও ডাকাতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে।
কলম্বিয়ার পিনেডা-মোগোলন ২০২৩ সালে ভিসার মেয়াদ পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। তিনি এপ্রিল ও মে মাসে নিউ ইয়র্ক ও নিউ জার্সিতে চুরি এবং চুরির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন।
কলম্বিয়ার পিনেডা-মোগোলন ২০২৩ সালে ভিসার মেয়াদ পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। তিনি এপ্রিল ও মে মাসে নিউ ইয়র্ক ও নিউ জার্সিতে চুরি এবং চুরির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন।
নিউয়ার্কের মেয়র রাস জে. বারাকা বলেছেন, বিদ্রোহ এবং পালিয়ে আসা বন্দীদের নিয়ে তিনি চিন্তিত। মেয়র রাস বারাকা বলেন, “এই ঘটনায় পর্যাপ্ত নজরদারি ছিল না। আইন ও অধিকার উপেক্ষিত হয়েছে।
জিইও গ্রুপ ও ডিএইচএস-এর কাছ থেকে আমরা স্পষ্ট জবাব চাই। বেসরকারি কারাগার আমাদের জন্য বড় সমস্যা, এর অবসান জরুরি।”
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?