স্পেনের চলচ্চিত্র ও অডিওভিজ্যুয়াল শিল্পে কাজ করা প্রতি ১০ জন নারীর মধ্যে ৬ জনই কর্মক্ষেত্রে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন। ‘অ্যাসোসিয়েশন অব উইমেন ফিল্মমেকারস অ্যান্ড অডিওভিজ্যুয়াল মিডিয়া’র এক সাম্প্রতিক গবেষণা এ চিত্র তুলে ধরেছে। রিপোর্টে বলা হয়, এই খাতে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার এখনই সময়।
‘আফটার দ্য সাইলেন্স: দ্য ইমপ্যাক্ট অব সেক্সুয়াল ভায়োলেন্স অ্যান্ড অ্যাবিউজ অ্যাগেইনস্ট উইম্যান ইন দ্য ফিল্ম অ্যান্ড অডিওভিজুয়াল ইন্ডাস্ট্রি’ শিরোনামে ৩১২ জন নারীর ওপর পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে—৬০.৩% নারী কর্মস্থলে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ৮১.৪% মৌখিক সহিংসতা, ৪৯.৫% শারীরিক নির্যাতন এবং ২২.৩% ডিজিটাল নিপীড়নের সম্মুখীন হয়েছেন।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, ৯২% ভুক্তভোগী কখনোই তাদের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করেননি। গবেষণা বলছে, লজ্জা, ভয়ের সংস্কৃতি, প্রতিশোধের আশঙ্কা এবং অভিযোগ জানানোর অনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া—সব মিলিয়ে ‘নীরবতা ও দায়মুক্তির’ একটি কাঠামো গড়ে উঠেছে।
গবেষণা প্রতিবেদনের অন্যতম লেখক এবং নারীবাদী গবেষক নেরিয়া বারহোলা রামোস বলেন, “এই সহিংসতা সমাজে এতটাই স্বাভাবিক হয়ে গেছে যে কেউ এর দায় নেয় না। কাস্টিং থেকে শুরু করে প্রযোজনার স্তর পর্যন্ত নারীরা কাঠামোগত নিপীড়নের শিকার। তরুণ নারীরা দ্বিগুণ ঝুঁকিতে থাকেন। বয়স ও আর্থিক অনিশ্চয়তা তাদের সহজ টার্গেটে পরিণত করে।”
প্রতিবেদনে যেসব সুপারিশ রাখা হয়েছে যৌন সহিংসতার ঘটনা প্রকাশের জন্য নিরাপদ ও আস্থাজনক পরিবেশ নিশ্চিত করা, বাধ্যতামূলক নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রবর্তন, শিল্পজুড়ে সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ ও প্রচার, কঠোর কর্মপরিদর্শন ও নিয়ন্ত্রক কাঠামোর বাস্তবায়ন।
এ প্রতিবেদনটি এমন সময় প্রকাশিত হলো, যখন এর আগে ফ্রান্সেও সাংস্কৃতিক খাতে যৌন নিপীড়নের বিষয়ে সংসদীয় তদন্তে উঠে এসেছে প্রায় একই রকমের ‘ব্যবস্থাগত ও দীর্ঘস্থায়ী’ সমস্যা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিকভাবে বিনোদন খাতে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?