প্রথমবারের মতো ‘৯৯—১’ সম্পত্তি কেনার স্কিমে আইআরএএস (ইনল্যান্ড রেভেনিউ অথরিটি অব সিঙ্গাপুর) এর কাছে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার জন্য মা এবং ছেলে কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মা, অঙ চিউ ইয়েন (৫৬) এবং তার ছেলে, কিথ ট্যান কাই ওয়েন (২৬) দুজনেই ট্যাক্স অফিসারকে মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়ার জন্য দুটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন। তারা একটি কন্ডোমিনিয়াম অ্যাপার্টমেন্টের জন্য বড় অংকের স্ট্যাম্প ডিউটি এড়িয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। যখন ট্যাক্স অফিসের অডিটররা তদন্ত করতে আসেন, তখন কর্মকর্তাদের মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করেন। অতিরিক্ত ক্রেতা স্ট্যাম্প ডিউটি এড়ানোর উদ্দেশ্যে তারা তাদের স্মার্টফোনের অনেক বার্তাও মুছে ফেলেন।
‘৯৯—১’ ব্যবস্থা হলো একটি সম্পত্তিতে একজন মালিকের ৯৯% এবং অন্যজনের ১% মালিকানা থাকার পদ্ধতি। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে কিছু সম্পত্তি ক্রেতা অতিরিক্ত ক্রেতার স্ট্যাম্প শুল্ক (ABSD) কমানোর চেষ্টা করেন। সাধারণত,একজন ব্যক্তি প্রথমে সম্পূর্ণ মালিকানা নিয়ে সম্পত্তি কিনে নেন, তারপর স্বল্প সময়ের মধ্যে ১% শেয়ার এমন একজনকে বিক্রি করেন যার ইতিমধ্যে সম্পত্তি রয়েছে, যাতে ABSD কমানো যায়।
আইআরএএসের প্রসিকিউটর, Goh Yong Ngee বলেছেন যে ট্যান ২০২১ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ১,১১৩,০০০ ডলার মূল্যে নিজের নামে ৪৯ ক্যানবেরা ড্রাইভে একটি কন্ডোমিনিয়াম ইউনিট কিনেছিলেন। সে সময়ে তিনি বেকার ছিলেন এবং ঋণ পাওয়ার জন্য অযোগ্য ছিলেন। তারা জানতেন যে ঋণের অনুমোদন পেতে অঙকেও যৌথ ক্রেতা হতে হবে। যদি তারা শুরু থেকেই সম্পত্তিটি যৌথভাবে কিনতেন, তবে তাদের পুরো সম্পত্তির ক্রয়মূল্যের ওপর এডিশনাল বায়ার স্ট্যাম্প ডিউটি (ABSD) দিতে হবে। যেহেতু ট্যান তার ক্রয়ের সময় অন্য কোনো আবাসিক সম্পত্তির মালিক ছিলেন না, সেহেতু তাকে কন্ডোমিনিয়াম ইউনিটের জন্য (ABSD) দিতে হয়নি। এরপর ঐ বছরই ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি তার মায়ের কাছে সম্পত্তির ১ শতাংশ শেয়ার ১১,১৩০ মূল্যে বিক্রি করেন।
যেহেতু অঙ অন্য একটি সম্পত্তির মালিক, তিনি তার শেয়ারের জন্য (ABSD) প্রদান করেন। আইআরএএসের অডিট চলাকালে, ট্যান বলেছিলেন যে তিনি সম্পত্তিটি কেনার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, ভেবেছিলেন যে পরিবার তাকে আর্থিকভাবে সমর্থন করবে। তার মা তাকে ঋণ নেওয়ার প্রস্তাব দেন তখন তিনি বুঝতে পারেন যে তার পরিবার তার সম্পত্তি কেনার জন্য অর্থায়ন করতে পারবে না, তাই তিনি তাকে যৌথ মালিক করার সিদ্ধান্ত নেন।
২০২৩ সালের ২২ মে আইআরএএস কর্মকর্তারা ট্যানকে তার এবং তার মায়ের ব্যাংকের সঙ্গে আদানপ্রদানকৃত চিঠিপত্র, সম্পত্তি এজেন্ট এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের তথ্যপ্রমাণ দিতে বলেন। আইআরএএস ট্যানকে প্রয়োজনীয় চিঠিপত্র সরবরাহ করার জন্য দুটি সতর্কবার্তা পাঠিয়েছিল একটি ২৯ মে এবং অন্যটি ১ জুন। এরপর আরেকটি ইমেইল পাঠানো হয় ১৮ জুন। ২৩ জুন ট্যান তার মায়ের ব্যাংকারের সঙ্গে হওয়া চিঠির একটি কপি WhatsApp এ যোগ করে আইআরএএস কর্মকর্তাদের কাছে পাঠান।
অতিরিক্ত তদন্তে জানা যায় যে তিনি ১০৯টি মেসেজ মুছে ফেলেছিলেন, যা তাদের অবস্থানের সাথে সাংঘর্ষিক ছিল, কিছু মেসেজ পরিষ্কারভাবে তাদের পরিকল্পনা তুলে ধরেছিল, যা ছিল “৯৯—১” ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কর ফাঁকি দেওয়ার উদ্দেশ্যে। ৩০ জুন আইআরএএস কমিশনার তাদেরকে(ABSD) হিসেবে ১৩০,৭৭৯ টাকা এবং একটি অতিরিক্ত ৬৫,৩৮৯ জরিমানা আরোপ করেন।
মিস্টার গোহ বলেন, অঙ এবং ট্যান ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে কোন উপায় নেই দেখে সত্য প্রকাশ করেছিলেন। দ্বিতীয় পক্ষের প্রতিরক্ষা আইনজীবী, মিস্টার আমোলাট সিং বলেন যে তারা ট্যাক্স অফিসকে প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে কাজ করেননি, বরং তারা একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে পড়ে গিয়েছিলেন। তারা এমন ব্যক্তি নন, যাদেরকে উদাহরণ হিসেবে নেওয়া উচিত, কারণ এই ধরনের অপরাধের এটিই প্রথম প্রসিকিউশন।
প্রসিকিউশনের প্রতিক্রিয়া ছিল, তারা শুধু বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে পড়েননি। বাস্তবে, তারা উভয়েই বিপজ্জনক পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য পরিকল্পনা করেছিল। এটি ঘটেছিল আইআরএএস কর্মকর্তাদের থেকে একাধিক সতর্কবার্তা দেওয়ার পরেও। ২০২৪ সালের ৭ মে ফাইনান্স মন্ত্রী লরেন্স অঙ বলেন, আইআরএএস প্রায় ৬০ মিলিয়ন (ABSD) এবং জরিমানা উদ্ধার করবে, কারণ তারা “৯৯—১” স্কিমের মাধ্যমে ১৬৬টি ব্যক্তিগত বাড়ি কেনার ঘটনা আবিষ্কার করেছে।
ওজঅঝ এই ধরনের লেনদেনকে ট্যাক্স পরিহারের প্রচেষ্টা হিসেবে বিবেচনা করে এবং এই ধরনের ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে। এই মামলায়, মা ও ছেলে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করে IRAS কে প্রতারিত করার চেষ্টা করেন, যা আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। এই রায় সম্পত্তি ক্রেতাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা, যাতে তারা ট্যাক্স পরিহারের অবৈধ পদ্ধতি থেকে বিরত থাকে এবং সঠিক নিয়ম মেনে চলে। এশিয়া ওয়ান
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?