মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে টমটম পার্কিং নিয়ে সংঘর্ষে অন্তত ৩৯ জন আহত হয়েছেন। রবিবার (৩০ মার্চ) রাতে উপজেলার গদার বাজার এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে ১৫টি টমটম ও একটি প্রাইভেটকার ভাঙচুর করা হয়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বিএনপি নেতা মহসিন মিয়া মধু গদার বাজার এলাকায় কয়েক মাস আগে ‘বিনা লাভের বাজার’ চালু করেন। আগে সেখানে টমটম চালকদের স্ট্যান্ড ছিল। রোববার রাতে মধু বাজার পরিদর্শনে গিয়ে সেখানে টমটম পার্কিং দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়েন।
টমটম চালকদের সঙ্গে প্রথমে বাগবিতণ্ডা হয়, এরপর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আনার মেম্বার টমটম চালকদের পক্ষে কথা বলেন। একপর্যায়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়, যা পরে শহরব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।
পশ্চিম ভাড়াউড়া গ্রামের লোকজন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে প্রায় ৪০০-৫০০ জন লাঠিসোঁটা নিয়ে শহরে আসে। অন্যদিকে মহসিন মিয়ার সমর্থকরাও দলবদ্ধ হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৫৬ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষ থামাতে ব্যর্থ হয়ে রাত ৩টার দিকে সেনাবাহিনীকে ডাকা হয়। সেনাবাহিনী মধুর বাসায় অভিযান চালিয়ে দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে।
সেনাবাহিনী বিএনপি নেতা মহসিন মিয়া মধু, তার ছেলে সুমন, ভাই সেলিম আহমদ, সাবেক কাউন্সিলর আলকাছ মিয়াসহ ১৩ জনকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
একই রাতে সেনাবাহিনী পশ্চিম ভাড়াউড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে আনার মেম্বারের ছেলেকে আটক করে।
শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র এএসপি আনিসুর রহমান বলেন, “সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে মোট ১৪ জনকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।”
শ্রীমঙ্গল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, “সংঘর্ষে আরও বড় ক্ষতি হতে পারতো। পুলিশ ব্যর্থ হওয়ায় সেনাবাহিনীকে নামানো হয়।”
এই ঘটনার পর শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, ঈদের কেনাকাটায় আসা লোকজন আটকা পড়েন, ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যৌথ বাহিনী টহল দিচ্ছে।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?