বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতায় আসার আট মাস পর সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে প্রথমবারের মতো বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই বৈঠককে ‘ইতিবাচক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, তবে একই সঙ্গে তিনি ভারতকে সতর্কও করেছেন—“বাংলাদেশকে আর পদানত রাখা যাবে না।”
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) নিউইয়র্ক সময় সকাল ১১টায় এবং বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় ঠিকানা টিভির সরাসরি টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীন। আলোচনায় আরও অংশ নেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।
জোনায়েদ সাকি বলেন, “৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণ যে রায় দিয়েছে, ভারতকে সেটি মনে রাখতে হবে। তারা যদি মনে করে, বাংলাদেশকে আগের মতোই নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে—তাহলে তারা ভুল করছে।”
তিনি মনে করেন, ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক সমতায়ন ও পারস্পরিক স্বার্থে গড়ে তুলতে হবে। “ড. ইউনূস পররাষ্ট্রনীতিতে যে দৃঢ়তা দেখাচ্ছেন, তা অব্যাহত রাখা জরুরি,”—বলেন তিনি।
“ড. ইউনূস ও মোদির বৈঠক বড় অর্জন নয়, তবে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব নয়—সম্পর্ক উন্নয়নই কাম্য। এই সম্পর্ক ‘উইন-উইন সিচুয়েশন’-এ রাখতে হবে, যেখানে কেউ শোষণ করবে না, সবাই লাভবান হবে।”তিনি আরও বলেন, ভারতের প্রতি নির্ভরশীলতা নয়, বাংলাদেশকে অবশ্যই তার স্বাধীন নীতিমালা ও কূটনৈতিক অবস্থান বজায় রাখতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ইতোমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি বড় ধরনের সংস্কারের দাবি জানায়, তবে জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত নেওয়া হতে পারে। তবে সংস্কার কম থাকলে নির্বাচন ২০২৫ সালের ডিসেম্বরেই হবে।
এ বিষয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন,“সরকার তাদের আগের ঘোষিত সময়সীমার মধ্যে আছে। যদি তারা এই সময়সীমা থেকে সরে আসে, তখন আমরা স্পষ্ট অবস্থান জানাব।”
তবে তিনি বলেন, “একজন ব্যক্তি যত ভালোই হোক না কেন, অন্তর্বর্তী সরকার চিরস্থায়ী হতে পারে না। গণতন্ত্রই একমাত্র পথ।”
নুরুল হক নুর এই প্রসঙ্গে আরও বলেন, “ড. ইউনূসকে পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় রাখার দাবি যারা করছে, তাদের উদ্দেশ্য সৎ নয়। আমরা অনির্বাচিত সরকারের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষমতা চাই না। এ জন্যই বিএনপিও দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে।”
তার ভাষায়, “যারা রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চায়, তারাই নির্বাচনের পরিবর্তে মেয়াদবৃদ্ধির পক্ষে কথা বলছে। তবে আমরা বিশ্বাস করি, ড. ইউনূস সেই ফাঁদে পা দেবেন না।”
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?