clock ,

পুঁজিবাদী রাষ্ট্রে বেঁচে থাকার যন্ত্রণা

পুঁজিবাদী রাষ্ট্রে বেঁচে থাকার যন্ত্রণা

তুই মোর ছাওয়াক চাকরি না দিবু না দে, কিন্তু মারলু ক্যানে?’ শহীদ আবু সাঈদের মা রাষ্ট্রকে এই প্রশ্ন করেছিলেন, উত্তাল সংগ্রামের দিনগুলোতে। এর ছয় মাস পর আরেক মা একই রকম আকুতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেনআমার ছেলে রাশিয়াইউক্রেনে যুদ্ধ করবে কেন?’ ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসিএই লাইন শোনার সঙ্গে সঙ্গে সেই ছেলেবেলায় স্কুলে থাকতে আমাদের অনেকের চোখে পানি চলে আসত।চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশিবলার সঙ্গে সঙ্গে আবেগের ফল্গুধারায় কেঁপে উঠতাম। এই দেশ, মাটির টানে। মা, মাটি আর মাতৃভূমির সঙ্গে প্রতিটা মানুষের আবেগের সম্পর্ক। নিজের পরিবার, নিজের প্রতিবেশ আর বান্ধবদের সঙ্গে থাকার যে শান্তি তা কেউই পারতপক্ষে ছাড়তে চায় না। যখন কাউকে তা ছাড়তে হয় তার অনুভূতি হয় শেকড় উপড়ানো গাছের মতো, পুকুর থেকে উঠিয়ে এনে অ্যাকুরিয়ামে রাখা মাছের মতো, অরণ্যে থাকা মুক্ত হরিণকে চিড়িয়াখানায় এনে রাখার মতো।

বাংলাদেশের বাস্তবতা হচ্ছে, এদেশের বড় অংশের তরুণরা দেশ ছাড়তে চায়। এই রাষ্ট্র ধনী কিংবা দরিদ্র, কারও জন্যই সুখকর হয়ে ওঠেনি। উচ্চশিক্ষা লাভ করা তরুণরা এই দেশে যথেষ্ট সুযোগ পায় না, নিজেদের মেধার বিকাশ বা মূল্যায়ন হয় না। তাই সুযোগের আশায় তারা দেশ ছাড়ে। অন্যদিকে, দরিদ্রমানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষায় যাদের পল্লীতে ঈশ্বর পর্যন্ত থাকে না, তারা দেশ ছাড়ে নিতান্ত বাধ্য হয়ে। অনেকের যথেষ্ট চাকরির সুযোগ নেই, ব্যবসার পরিবেশ নেই, এমনকি মানবিক মর্যাদা পর্যন্ত নেই। এইসব দরিদ্র তরুণরা নিজের শেকড় উপড়ে ফেলে ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ পথ পাড়ি দিয়ে বিদেশ যায়। কেউ কেউ মরুভূমির তপ্ত রোদে অল্প কিছু পয়সার আশায় উট চড়ায়, দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে অমানবিক জীবনযাপন করে প্রবল অত্যাচার আর গ্লানি সয়ে। কেউ কেউ ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে চায় ছোট নৌকায়, এরপর অবৈধ অভিবাসী হয়ে চোরপুলিশ খেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে। জঙ্গলে, মরুভূমিতে দিনের পর দিন না খেয়ে, বিভ্রান্ত বেদিশা হয়ে ঘোরে, যদি কোনোমতে সেইসব স্বপ্নের দেশে গিয়ে পরিবারের জন্য কিছু উপার্জন করে পাঠানো যায়।

এই অসহায় মানুষগুলোকে দিয়ে ব্যবসা করে সুযোগসন্ধানী দালালরা। আর এর সবচেয়ে নিষ্ঠুর উদাহরণ হয়ে দেখা দিল এইসব তরুণদের কবজা করে রাশিয়াইউক্রেন যুদ্ধে মিলিশিয়া হিসেবে ব্যবহার করায়। একটি স্থানীয় পত্রিকায় লিড নিউজের শুরুটা হয় এভাবে জীবন জীবিকায় কিছুটা সচ্ছলতা ফেরানোর দুচোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে ইউরোপের দেশ সাইপ্রাসের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছাড়েন জাফর। কিন্তু দেশ ছাড়ার পর সৌদি আরব সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী দুবাই হয়ে কয়েক হাত বদলের পর ২০ লাখ টাকায় তাকে রাশিয়ার একটি মানব পাচার চক্রের কাছে বিক্রি করে দেয় দালাল চক্র। সেখানে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য প্রশিক্ষণ নিতে বাধ্য করে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। এতে রাজি না হলেই নেমে আসত ভাষায় অবর্ণনীয় নির্যাতনের খড়গ। যশোর সদরের চাচরা ইউনিয়নের এই যুবক এখন প্রতিটি মুহূর্ত পার করছেন মৃত্যুভয়কে সঙ্গী করে। স্থানীয় দালাল রাজধানী ঢাকার একটি মানব পাচার চক্রের ফাঁদে পড়ে নিজের জীবন তো বটেই, একই সঙ্গে তার পুরো পরিবারকে ফেলেছেন অনিশ্চিত এক ভবিষ্যতের দিকে। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে নিজের একটি ছবি তুলে পরিবারের কাছে পাঠিয়ে জীবন নিয়ে দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন জাফর। সেই জাফরের মা হাসিনা খাতুন, অসহায় আকুলতায় জিজ্ঞাসা করেনআমার ছেলে রাশিয়াইউক্রেনে যুদ্ধ করবে কেন’? মানুষের মাংসের ওপর টিকে থাকা রাষ্ট্র আর পুঁজিবাদকে নাড়িয়ে দেন তিনি এই প্রশ্নে, যেমনটা দিয়েছিলেন সাঈদের মা। উন্নত জীবনের আশায় নাটোর থেকে বিদেশে পাড়ি জমান রহমত আলী হুমায়ুন কবির। তারাও একই কায়দায় দালালদের খপ্পরে পড়ে বিক্রি হয়ে যান রাশিয়ায়। রহমত হুমায়ুন সম্পর্কে শ্যালকদুলাভাই। এরই মধ্যে প্রশিক্ষণ শেষে যুদ্ধের মাঠে গিয়ে ড্রোন হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন হুমায়ুন। যে খবর বাড়িতে জানিয়েছেন রহমত আলী। তিনি এখনো প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। নিজের দুরবস্থার কথা জানিয়ে নিয়মিত বিরতিতে বাড়িতে মোবাইল ফোনে কল করে তাকে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে কান্নাকাটি করছেন। রহমত হুমায়ুনের এমন পরিণতিতে শোক দুশ্চিন্তায় ভেঙে পড়েছেন তাদের পরিবারের সব সদস্য। তাদের প্রতিবেশী শিহাব বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে তো সবাই ইতিমধ্যে জেনেই গেছে। এখন যেটা সমস্যা সেটা হলো নিহতের লাশ দেশে আনা যে সেখানে বেঁচে আছেন তাকে ফিরিয়ে আনা। কিন্তু এই কাজ দুটোই খুব ধীরগতিতে হচ্ছে। থানা, পুলিশ, সিআইডি স্বরাষ্ট্র আর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দৌড়ঝাঁপ করেও সহসাই কিছু হচ্ছে না।জাফর, রহমত হুমায়ুনের মতো এরই মধ্যে অন্তত ৩৫ বাংলাদেশি দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে রাশিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য হয়েছেন।

কেবল যুদ্ধই নয়, প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় আড়াই কোটি নারী, পুরুষ শিশু পাচারের শিকার হচ্ছে। বাণিজ্যিকভাবে তাদের যৌনকাজে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে, বলপূর্বক শ্রম ঋণদাসত্ব হিসেবে কেনাবেচা করা হচ্ছে। পাচারকারীরা বিশ্বের প্রতিটি দেশের মানুষকে তাদের শিকারে পরিণত করার মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। খুলনা, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, ঢাকা, রংপুর, কুমিল্লা, চাঁদপুরসহ দেশের প্রায় প্রতিটি জেলা থেকেই মানব পাচার হচ্ছে। ঢাকঢোল পিটিয়েও মানব পাচার প্রতিরোধ করতে পারছে না আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। মাঝেমধ্যে ছোটখাটো মানব পাচারকারী গ্রেপ্তার হলেও রাঘববোয়ালরা থাকছে ধরাছেঁায়ার বাইরে। আলোচিত কোনো ঘটনা ঘটলে তালিকার পর তালিকা হয়। পুলিশের ঊর্ধ্বতনরা করেন দফায় দফায় বৈঠক। তালিকায় নাম আসাদের বেশিরভাগই প্রভাবশালী। এর মধ্যে ৬৭টি সিন্ডিকেটই বেশি ক্ষমতাধর। তারা ইউরোপসহ নানা দেশে মানব পাচার করছে। বৈধ ব্যবসার আড়ালে অবৈধভাবে ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানব পাচারে জড়িত তালিকাভুক্তরা। মানব পাচার প্রতিরোধ তালিকাভুক্তদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশের সবকটি ইউনিটকে নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। তারপরও থেমে নেই মানব পাচার, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চাকরির নামে পাচার করা হচ্ছে। ট্রাভেল এজেন্টের মাধ্যমে মানব পাচার করা হচ্ছে বেশি। রাশিয়া, লিবিয়া, ইতালি, ফ্রান্স যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপে চাকরির কথা বলেই লোকজনকে নেওয়া হচ্ছে বেশি। গত এক বছরে ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইতালিসহ অন্যান্য দেশে পাড়ি দিতে গিয়ে দুই হাজারের বেশি মারা গেছেন। তার মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। গত বছর ২৩ সেপ্টেম্বর একটি বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাশিয়ায় ক্যান্টনমেন্টে মালি বাবুর্চির কাজের সুযোগ হাতছানি দিচ্ছে। বেতন শুরু দেড় হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় তা লাখ ৮০ হাজার। এক মাসের মধ্যেই ভিসা শেষ করে রাশিয়ায় পাঠানো হবে। এসব বিজ্ঞাপন দেখে উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখা লোকেরা প্রতারিত হয়।

শুধু যে মোটা টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিদেশে নিয়ে গিয়ে যুদ্ধ কিংবা যৌনতার ব্যবসায় কাজে লাগানো তাই না, কোনো কোনো পাচারকারী মুক্তিপণও আদায় করছে। মুক্তিপণ না পেয়ে ২০২০ সালের ২৭ মে লিবিয়া পাড়ি জমানো ৩৭ জন বাংলাদেশির মধ্যে ২৬ জনকে সাহারা মরুভূমি অঞ্চলের মিজদায় গুলি করে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে অনেকের বাঁচার আকুতির ভয়েস রেকর্ড শোনানো হয়েছিল তাদের স্বজনদের। এমনকি যারা মুক্তিপণের টাকা দিতে পেরেছিল তাদেরও নির্যাতন করা হয়। অভিযোগ আছে যে ভারত, নেপাল, দুবাই মিসর ঘুরে লিবিয়া যাওয়ার পর চক্রের সদস্যদের হাতে জিম্মি করে রাখা হয় ভাগ্যের অন্বেষণে দেশছাড়া যুবকদের। এরপর আরও ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা দাবি করা হয়। তা দিতে ব্যর্থ হলে তাদের নির্যাতন করে পরিবারের কাছ থেকে আদায় করা হয় অর্থ। টাকা সংগ্রহ করে দেশে অবস্থানরত চক্রের সদস্যরা। তারা ওই টাকা হুন্ডির মাধ্যমে দুবাই পাঠিয়ে দেয়। সেখান থেকে ধাপে ধাপে সেই টাকা ভাগবাটোয়ারা হয়। তাছাড়া দুবাই, আম্মান লিবিয়া হয়ে ইতালিতে নেওয়ার জন্য রয়েছে আলাদা একটি চক্র। এই চক্রের সদস্যরা ইউরোপকেন্দ্রিক মানব পাচার করে। এই যে অগণিত যুবকের বিদেশ যাওয়ার ঢল, তারা কি জানেন না আশু বিপদের কথা? এত এত উদাহরণ দেখেও কি তাদের টনক নড়ে না? নিশ্চয়ই তারা জানেন। তবুও, অসহায়ত্ব তাদের বেশিরভাগকে সেদিকে ঠেলে দেয়। কারণ, মানুষ হয়ে জন্ম নিলে কেবল খেয়েপরে বেঁচে থাকা সম্ভব না। তাকে স্বপ্ন দেখতে হয়। একজন পিতার কাছে সবচেয়ে বড় সুখ তার সন্তানকে চোখের সামনে বেড়ে উঠতে দেখা। সেই স্বর্গীয় সুখকে অগ্রাহ্য করে পিতাকে বছরের পর বছর বিদেশের মাটিতে অনিশ্চিত অপমানের জীবন কাটাতে হয় সেই সন্তান যাতে সম্মানের সঙ্গে বড় হয়, প্রকৃত প্রস্তাবেই মানুষের জীবন পায়, যা এই রাষ্ট্র তার বাবাকে দিতে পারেনি।

তৃতীয় বিশ্বের অভাগা বাংলাদেশ যেন গোটা দুনিয়ায় মানুষের মাংসের সাপ্লায়ার। সস্তা শ্রমই এদেশের সবচেয়ে বড় আয়ের উৎস। হাঙ্গেরির দার্শনিক কার্ল পোলাইনিই তার ম্যাগনাম ওপাস দ্যা গ্রেট ট্রান্সফর্মেশনে দেখান যে, পুঁজিবাদের জন্য এই মাংসের সাপ্লাই খুব জরুরি। সস্তা শ্রমের নিশ্চয়তায় সে এমন একটা ভয়ংকর পরিবেশ তৈরি করে, যেখানে তরুণরা নিজের শেকড় উপড়ে অনিশ্চিত বিদেশ গমনে বাধ্য হয়। ইউরোপের শিল্পবিপ্লব শুরুই হয়েছিল শেকড় উপড়ে ফেলার এই প্রক্রিয়া দিয়ে। ডেভিড রিকার্ডোর মতো অর্থনীতিবিদরা টু সেক্টর মডেলের মাধ্যমে সস্তা শ্রম নিশ্চিত করার কথা বলতেন, যার বিরোধিতায় কার্ল মার্কস দেখান আসলে কীভাবে এর মাধ্যমে শ্রমিকের উপার্জিত ভ্যালু চুরি করে পুঁজিপতিরা টাকার পাহাড় বানায় আর অসহায় শ্রমিকরা আরও অসহায় হয়। মার্কসের মতো পোলাইনিইও দেখান কীভাবে এই শ্রমিকদের নিজেদের জীবন শ্রমকে বিযুক্ত করে ফেলা হয়। মানুষকে তার সমাজ, পরিবার, পরিজন থেকে বিভিন্ন পলিসির মাধ্যমে সম্পূর্ণ শেকড়শূন্য করার পরই সে মুক্তবাজার অর্থনীতিতে নিজের শ্রম বেচতে যায়। এই মানুষগুলোই যদি দেশে থাকত, তবে রাষ্ট্র বৈদেশিক মুদ্রা পেত না। আর তা না  পেলে তার কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়ত। যেমনটা আমরা জুলাই আন্দোলনের সময়ে দেখেছিলাম, রেমিট্যান্স বন্ধের হুমকিতে কী রকম ক্রুদ্ধ হয়েছিল হাসিনাশাহী। জাফর, রহমতদের অমানবিক জীবনের বিনিময়ে তারা ক্ষমতা সংহত করে, ওদেরই পয়সায় গুলি কিনে ওদেরই মারে, অলিগার্করা দেশে আয়েশ করে বিদেশে বেগমপাড়া বানায়। ট্রান্স আটলান্টিক স্লেভ ট্রেডের সময় আফ্রিকার বেনিনের ডাহোমেই রাজত্ব বা ঘানার অশান্তি রাজত্ব নিজের দেশের মানুষ বিক্রি করেই বড়লোক হয়ে গিয়েছিল। তারা মানুষ বিক্রি করে বন্দুক কিনে আরও বেশি যুদ্ধ করে আরও বেশি দাস বানাত আর আরও বেশি মানুষ বিক্রি করত। শাসকরা আরও ধনী হতো। ঔপনিবেশিক শাসন থেকে বহু আগে মুক্ত হলেও, আমাদের সোনার বাংলায় সেই মানসিকতা বা শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন হয়নি। তবে কি মানুষের মাংসের বেসাতি করেই এই রাষ্ট্র চলছে? এটাই কি আমাদের নিয়তি!

 লেখক: সাংবাদিক অনুবাদক


You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?

আমাদের অনুসরণ করুন

জনপ্রিয় বিভাগ

সাম্প্রতিক মন্তব্য