ঢাবিতে ১,০৩৫ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন, গবেষণায় বরাদ্দ মাত্র ২.০৮%

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ২০২৫–২৬ অর্থবছরের জন্য ১ হাজার ৩৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন করেছে। তবে দেশের অন্যতম উচ্চশিক্ষা ও গবেষণাকেন্দ্র হিসেবে খ্যাত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটে গবেষণায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে মাত্র ২.০৮ শতাংশ, অর্থাৎ ২১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।

মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের অধ্যাপক আব্দুল মতিন ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বাজেটের বিস্তারিত তুলে ধরেন। এর আগের দিন সিন্ডিকেট সভায় বাজেটটি অনুমোদিত হয়।

গত অর্থবছরের (২০২৪–২৫) সংশোধিত বাজেট ছিল ৯৯৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। সেবছর গবেষণায় বরাদ্দ ছিল ২০ কোটি ৭ লাখ টাকা। এবারের বরাদ্দ তার চেয়ে মাত্র ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা বেশি, যা ০.১৬ শতাংশ বৃদ্ধি।

খরচের খাতভিত্তিক বিশ্লেষণ

নতুন বাজেটে সবচেয়ে বড় অংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে বেতন ও ভাতা খাতে। এর মধ্যে:

বেতন খাতে: ২৯৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা (২৮.৩৪%)

ভাতা খাতে: ২১৫ কোটি ৯১ লাখ ৪৩ হাজার টাকা (২০.৮৪%)

পণ্য ও সেবা খাতে: ২৮৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকা (২৭.৬২%)

পেনশন খাতে: ১৩৯ কোটি ৮৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা (১৩.৪১%)

গবেষণা বরাদ্দ এসব খরচের তুলনায় অপ্রতুল হওয়ায় উচ্চশিক্ষার মান ও জ্ঞান সৃষ্টির ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষানবিশ ও বিশ্লেষকরা।

ঘোষিত বাজেটের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে অনুদান পাওয়া যাবে ৮৮৩ কোটি ৪ লাখ টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় দেখানো হয়েছে ৯০ কোটি টাকা। বাকি ৬২ কোটি ৪১ লাখ টাকার ঘাটতি রয়ে যাবে, যা ভবিষ্যতে পূরণের উপায় এখনো অনির্দিষ্ট।

এবার বাজেট অনুমোদনের পর সাধারণ প্রথা অনুযায়ী তা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে উপস্থাপন করা হয়নি। বরং সরাসরি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তা ঘোষণা করা হয়, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ব্যতিক্রম।

এই প্রসঙ্গে কোষাধ্যক্ষ বলেন, “সিনেটে ২৫ জন শিক্ষক প্রতিনিধির মেয়াদ ১৫ জুন শেষ হয়েছে। রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট সদস্যদের মধ্যে অনেকে ফ্যাসিবাদের সহযোগী। সরকার থেকেও এখনো প্রতিনিধি মনোনয়ন আসেনি। ফলে প্রশাসনিক জটিলতার কারণে এ বছর নির্ধারিত সময়ে সিনেট অধিবেশন করা সম্ভব হচ্ছে না।”

গবেষণা খাতে বরাদ্দ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক জাহাঙ্গীর বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট প্রণয়নে স্বাধীনতা নেই। ইউজিসি থেকে নির্দিষ্ট বরাদ্দ দেওয়া হয়, আমরা এর বাইরে যেতে পারি না। তবে আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে কথা বলেছি এবং প্রস্তাব আকারে জমা দিতে বলা হয়েছে।”