গাজায় হামাসের হাতে থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির লক্ষ্যে ৪৫ দিনের যুদ্ধবিরতির একটি নতুন প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। মধ্যস্থতাকারী দেশ মিসর ও কাতারের মাধ্যমে প্রস্তাবটি সোমবার গাজায় পাঠানো হয়েছে।
রয়টার্সের হাতে পাওয়া প্রস্তাবের অনুলিপি অনুযায়ী, ইসরায়েলের এই প্রস্তাবে রয়েছে ৫টি মূল শর্ত:
১) জিম্মি ও বন্দী মুক্তি: যুদ্ধবিরতির প্রথম সপ্তাহে হামাস ১০ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে, আর এর বিনিময়ে ইসরায়েল ১২০ জন ফিলিস্তিনি বন্দীকে ছেড়ে দেবে।
২) সেনা মোতায়েন সীমিতকরণ: গাজা উপত্যকার অভ্যন্তরে সেনা মোতায়েন সীমাবদ্ধ থাকবে। ১৯ জানুয়ারির আগে যেসব এলাকায় ইসরায়েলি সেনা ছাউনি গড়েছে, তারা সেখানেই অবস্থান করবে। এছাড়া যুদ্ধবিরতির সময় ফিলিস্তিনিরা উত্তর ও দক্ষিণ গাজার মধ্যে চলাচলের জন্য নেতজারিম করিডোর ব্যবহার করতে পারবে।
৩) ত্রাণ ও পুনর্গঠন: গাজায় মানবিক ত্রাণ ট্রাকের প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে এবং বসতবাড়ি ও অবকাঠামো পুনর্গঠনের কাজ শুরু করা যাবে।
৪) স্থায়ী যুদ্ধসমাপ্তির আলোচনা: যুদ্ধ স্থায়ীভাবে বন্ধের লক্ষ্যে মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় আলোচনার সূচনা করা হবে।
৫) হামাসের শর্ত: হামাসকে সশস্ত্র সংগ্রামের পথ ত্যাগ করতে হবে এবং গাজায় বর্তমানে কতজন জিম্মি জীবিত বা মৃত রয়েছে, তার বিস্তারিত তথ্য প্রমাণসহ উপস্থাপন করতে হবে।
প্রস্তাবটি এখন হামাসের হাতে রয়েছে, এবং গোষ্ঠীটির মুখপাত্র আবু জুহরি জানিয়েছেন, তারা এটি পর্যালোচনা করছে। তবে হামাসের নেতারা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, সশস্ত্র সংগ্রাম ত্যাগের শর্ত তারা মানবেন না।
এর আগে হামাস একটি পাল্টা প্রস্তাব দিয়েছিল, যাতে বলা হয়— ইসরায়েল যদি গাজা থেকে সেনা পুরোপুরি সরিয়ে নেয়, তাহলে তারা সব জিম্মিকে মুক্তি দেবে। তবে ইসরায়েল নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ সম্প্রতি বলেছেন, গাজার কিছু অংশ ‘নিরাপত্তা অঞ্চল’ হিসেবে থেকে যাবে এবং সেখানে ইসরায়েলি সেনা উপস্থিতি বজায় থাকবে।
এদিকে মিসরের এক সরকারি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, “হামাস এখন জানে সময় কতটা গুরুত্বপূর্ণ, এবং আমাদের বিশ্বাস, তারা দ্রুতই এ প্রস্তাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে।”
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?