এলডিসি উত্তরণে চূড়ান্ত প্রস্তুতি: রফতানি খাতে সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জোরালো উদ্যোগের তাগিদ
বাংলাদেশ ২০২৬ সালের নভেম্বরে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে চূড়ান্তভাবে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, তিনটি সূচকে নির্ধারিত মান অতিক্রম করায় উত্তরণ এখন সময়ের দাবি। তবে সম্ভাব্য রফতানি সংকট মোকাবেলায় এখনই প্রয়োজন সময়োপযোগী প্রস্তুতি ও দীর্ঘমেয়াদি কৌশল।
জাতিসংঘের উন্নয়ন নীতিবিষয়ক কমিটির (সিডিপি) নির্ধারিত তিনটি সূচক—মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ সূচক এবং অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ভঙ্গুরতা সূচকে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে যোগ্যতা অর্জন করেছে। এ কারণে ২০২১ সালে এলডিসি উত্তরণের সুপারিশ করে সিডিপি, যা বাস্তবায়নের সময় নির্ধারণ হয়েছে ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর আন্তর্জাতিক সহায়তা ও বাণিজ্য সুবিধা হারানোর ঝুঁকিতে পড়তে পারে রফতানি খাত। এজন্য এখন থেকেই ব্যাংক ঋণ সহজীকরণ, নীতিগত সহায়তা এবং প্রয়োজন হলে নগদ প্রণোদনা দেওয়ার সুপারিশ করছেন তারা।
বিআইডিএস-এর সাবেক মহাপরিচালক মোস্তফা কে মুজেরি বলেন, “রফতানিকে টিকিয়ে রাখতে আমাদের কাছে অনেক নীতিগত পদ্ধতি রয়েছে—যেগুলো সময়মতো কাজে লাগাতে হবে।”
সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “তথ্য কিছুটা অতিরঞ্জিত হলেও মূল সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে। এলডিসি উত্তরণ এখন সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।”
তবে বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, “বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার আইনের আওতায় রফতানি সুবিধা অব্যাহত রাখা সম্ভব। কিন্তু সরকারকে এখন থেকেই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। ব্যাংক ঋণ, পলিসি সাপোর্ট ছাড়া খাতটি ঝুঁকিতে পড়বে।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রফতানি বাজার ধরে রাখতে আমদানি বিকল্প পণ্যের উৎপাদন বাড়ানো, এসএমই ও ব্যাংক খাতকে শক্তিশালীকরণ এবং পুঁজিবাজার উন্নয়নে জোর দিতে হবে।
এলডিসি উত্তরণ বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে, তবে বাণিজ্যিক বাস্তবতা মোকাবেলায় সরকার, উদ্যোক্তা ও নীতিনির্ধারকদের সমন্বিত উদ্যোগ এখন সময়ের দাবি।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?