clock ,

সাবেক মেয়র তালুকদার খালেকের দুর্নীতির তদন্ত শুরু, তিন ঠিকাদারের তথ্য চাইলো দুদক

সাবেক মেয়র তালুকদার খালেকের দুর্নীতির তদন্ত শুরু, তিন ঠিকাদারের তথ্য চাইলো দুদক

অবশেষে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) অপসারিত মেয়র মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি অনিয়মের তদন্ত শুরু করেছে। ২০২৫ সালের ২১ জানুয়ারি দুদক এই অনুসন্ধানের জন্য তিন সদস্যের একটি টিম গঠন করে, যারা ২৩ জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করেছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মেয়র থাকাকালীন তালুকদার খালেক আইন লঙ্ঘন করে সহযোগীদের বেনামে কোটি কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ করেছেন। তিনি তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স ব্যবহার করে এসব কাজ করেছেন। প্রতিষ্ঠানগুলো হলোমেসার্স হোসেন ট্রেডার্স, তাজুল এন্টারপ্রাইজ, এবং আজাদ ইঞ্জিনিয়ার্স। দুদক ইতোমধ্যে কেসিসির প্রশাসককে চিঠি দিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানের কাজ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য চেয়েছে।

এছাড়া মেয়রের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত এইচ এম সেলিম ওরফে সেলিম হুজুরের ঠিকাদারি কার্যক্রম সম্পর্কিত তথ্যও চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, মেয়র হিসেবে তালুকদার খালেকের দায়িত্বকালীন ব্যবহৃত সকল গাড়ির লগবই সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছে দুদক।

কেসিসি কর্মকর্তাদের দাবি, মেয়রের পদ ব্যবহার করে গত ১৫ বছরে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন তালুকদার খালেক। তদন্তে দেখা গেছে, তিনি আইন লঙ্ঘন করে অন্যের লাইসেন্সে প্রায় ৬০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছেন। তার সহযোগী সেলিম হুজুর এসব কাজ দেখাশোনা করতেন। এছাড়া শতাংশ কমিশনের ভিত্তিতে আরও শত কোটি টাকার কাজ বড় ঠিকাদারদের কাছে বিক্রি করেছেন।

তালুকদার খালেক বাগেরহাট- আসনের চারবারের সংসদ সদস্য ছিলেন। কেসিসির মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তার স্ত্রী হাবিবুন নাহার ওই আসনের সংসদ সদস্য হন এবং উপমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে রামপাল মোংলা উপজেলার সবকিছুই তালুকদার খালেক নিয়ন্ত্রণ করতেন। রামপালের সভা-সমাবেশে অংশ নিতে তিনি কেসিসির গাড়ি তেল ব্যবহার করতেন।

দুদক ২৪ ডিসেম্বর তালুকদার খালেকের বিরুদ্ধে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়। ২১ জানুয়ারি খুলনার উপ-পরিচালক আবদুল ওয়াদুদের নেতৃত্বে অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়। দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে কেসিসিকে চিঠি দিয়ে মেয়রের ঠিকাদারি কাজ, গাড়ির লগবই, এবং অন্যান্য রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়েছে।

তালুকদার খালেক নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি ওই প্রতিষ্ঠান থেকে আর্থিক অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। দুদক এই বিষয়েও তদন্ত করছে।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, তালুকদার খালেক এবং তার স্ত্রী হাবিবুন নাহারের আয়কর রিটার্ন সংশ্লিষ্ট রেকর্ডও তলব করা হয়েছে। এছাড়া খালিশপুর ১৮ নম্বর রোড উন্নয়ন প্রকল্পসহ বিভিন্ন কাজের দরপত্র সংক্রান্ত নথি চাওয়া হয়েছে।

আগস্ট থেকে তালুকদার খালেক আত্মগোপনে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে হত্যা সহ একাধিক মামলা রয়েছে। বর্তমানে তিনি পার্শ্ববর্তী একটি দেশে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।

এই ঘটনা দুর্নীতি ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে দেশজুড়ে নতুন আলোচনা সৃষ্টি করেছে।

 

You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?

আমাদের অনুসরণ করুন

জনপ্রিয় বিভাগ

সাম্প্রতিক মন্তব্য