সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে যে, ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে তিনি রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম দাবি করেছেন, তার কাছে এই নির্দেশনার প্রমাণ রয়েছে।
প্রসিকিউটর তাজুল ইসলামের মতে, শেখ হাসিনা যখন হাসপাতালে পরিদর্শনে যান, তখন তিনি কর্তব্যরত চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন—"নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ" (চিকিৎসা নয়, মুক্তিও নয়)। আহত রোগী ও তাদের স্বজনদের বরাতে জানা যায়, এই নির্দেশনার ফলে অনেককে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হতে হয়। চিকিৎসকরা এ অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বলেও দাবি করা হয়েছে।
এই অভিযোগ সত্য হলে এটি মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। চিকিৎসাসেবা প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার। আহতদের চিকিৎসা না দেওয়া এবং হাসপাতালে আটকে রাখার বিষয়টি সংবিধান ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন পরিপন্থী।
এছাড়া, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্দোলনকারীদের শহীদের মরদেহ সুরতহাল প্রতিবেদন বা পোস্টমর্টেম রিপোর্ট ছাড়াই দাফন করতে বাধ্য করা হয়েছে। এমনকি, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ লুকিয়ে রাখতে মৃত্যুর সনদে গুলিবিদ্ধ হওয়ার তথ্য উল্লেখ করতে দেওয়া হয়নি।
প্রতিবেদনটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হলেও, এখনো অভিযোগের প্রমাণ প্রকাশ করা হয়নি। ফলে এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নাকি বাস্তব সত্য, তা নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে যাচাই করা জরুরি।
আদালত ইতোমধ্যে শহীদদের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট না থাকার বিষয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের সম্ভাব্য প্রমাণ হিসেবে বিবেচনা করছে। যদি অভিযোগের যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে এটি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের পথে এগোতে পারে। তবে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ বিচার নিশ্চিত করাই হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
এই অভিযোগ দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। একদিকে এটি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের ইঙ্গিত দেয়, অন্যদিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। নিরপেক্ষ তদন্ত এবং সঠিক তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, যাতে সত্য উন্মোচিত হয় এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?