সদ্য শেষ হওয়া শীতকালীন দলবদলে সবচেয়ে আলোচিত ছিলেন নেইমার জুনিয়র ও মার্কাস রাশফোর্ড। বিশাল অঙ্কের অর্থ ছাড় দিয়ে নেইমার একেবারে বিনামূল্যে ফিরে গেছেন ছেলেবেলার ক্লাব সান্তোসে। অন্যদিকে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে ২০ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে রাশফোর্ড যোগ দিয়েছেন অ্যাস্টন ভিলায়।
তবে পাঁচ সপ্তাহব্যাপী দলবদলে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন এনেছে ম্যানচেস্টার সিটি। দল পুনর্গঠনের লক্ষ্যে ক্লাবটি ২১৬ মিলিয়ন ইউরো (১৮০ মিলিয়ন পাউন্ড) বিনিয়োগ করেছে। বিপরীতে, লিভারপুল ও আর্সেনালের মতো শীর্ষ ইংলিশ ক্লাবগুলো কোনো নতুন খেলোয়াড় দলে নেয়নি। একই পথে হেঁটেছে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনাও।
ম্যানচেস্টার সিটির দলবদল
ট্রেবলজয়ী ম্যানচেস্টার সিটির অবস্থা এই মৌসুমে কিছুটা নাজুক। নতুন ফরম্যাটের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের শঙ্কায় ছিল দলটি। শেষ মুহূর্তে প্লে-অফ নিশ্চিত করলেও প্রিমিয়ার লিগে তাদের শিরোপা সম্ভাবনা অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে। তাই পেপ গার্দিওলা দল পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেন।
সিটির নতুন সংযোজন: ক্লডিও ইচিভেরি (রিভার প্লেট), উমর মারমোশ (ফ্রাঙ্কফুর্ট), আব্দুকোদির কুশানভ (লেন্স), ভিতোর রেইস (পালমেইরাস), নিকো গঞ্জালেজ (পোর্তো)।
তবে দল ছেড়েছেন সিটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ডিফেন্ডার কাইল ওয়াকার, যিনি যোগ দিয়েছেন এসি মিলানে। অ্যাস্টন ভিলা এই দলবদলে বেশ সক্রিয় ছিল। ২১ বছর বয়সী কলম্বিয়ান স্ট্রাইকার জন ডুরান্ডকে ৭৭ মিলিয়ন ইউরোয় আল নাসরে বিক্রি করে বিশাল লাভ করেছে ভিলা। দলবদলের শেষ মুহূর্তে ম্যানইউ থেকে ধারে মার্কাস রাশফোর্ডকে দলে ভিড়িয়ে স্ট্রাইকিং সংকট মেটায় তারা।
নতুন সংযোজন:মার্কো অ্যাসেনসিও (পিএসজি), এক্সেল ডিসাইস (চেলসি), দোনেল মালেন (বরুশিয়া ডর্টমুন্ড), আন্দ্রেস গার্সিয়া (স্পেন)। দল ছাড়েন এমিলিয়ানো বুন্দিয়া ও দিয়াগো কার্লোস। তবে নতুন চেহারায় দেখা যাবে ভিলাকে।
নাপোলি থেকে ৬০ মিলিয়ন ইউরোতে খাভিচা খারাস্তাস্কেলিয়াকে দলে টেনেছে।জাভি সিমন্সকে ৪৬ মিলিয়ন ইউরোয় লাইপজিগে বিক্রি করে ভালো লাভ করেছে।কোলু মোয়ানিকে ধারে জুভেন্টাসে পাঠিয়েছে।মার্কো অ্যাসেনসিওর বিদায়ে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে দলটির।নতুন কোচ রুবেন আমোরিম বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় দলে টানতে চেয়েছিলেন, কিন্তু সফল হননি।মাতিয়াস টেলকে দলে নেওয়ার চূড়ান্ত চেষ্টা করেও শেষ মুহূর্তে তাকে টটেনহাম ছিনিয়ে নেয়। রাশফোর্ড ও অ্যান্থনি দল ছাড়ায় আক্রমণভাগ দুর্বল হয়েছে। প্যাট্রিক ডোরগু (লেচ্চে) ও এইডেন হেভেন (আর্সেনাল) ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোনো চুক্তি করতে পারেনি ক্লাবটি।
কাইল ওয়াকারকে ম্যানসিটি থেকে দলে টেনেছে। শেষ মুহূর্তে জোয়াও ফেলিক্স (চেলসি) ও সান্তিয়াগো জিমিনেজ (ফেনুয়ার্দ) দলে নিয়ে চমক দেখিয়েছে।বুকায়ো সাকা ও গ্যাব্রিয়েল জেসুস চোটে পড়ার পরও নতুন স্ট্রাইকার আনতে ব্যর্থ হয়েছে।ওলি ওয়াটকিন্স (অ্যাস্টন ভিলা), দুসান ব্লাহোভিচ (জুভেন্টাস) ও নিকো উইলিয়ামসকে (আথলেটিক বিলবাও) দলে নেওয়ার চেষ্টা করলেও কোনো চুক্তি হয়নি।
শীতকালীন দলবদলে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করেছে ম্যানচেস্টার সিটি, তবে অ্যাস্টন ভিলা ও পিএসজি কার্যকর দলবদলের মাধ্যমে লাভবান হয়েছে। বিপরীতে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও আর্সেনাল প্রত্যাশিত দলবদল সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, এই পরিবর্তনগুলো দলগুলোর পারফরম্যান্সে কী প্রভাব ফেলে।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?