clock ,

রানা প্লাজার বিচার থমকে ১২ বছর: প্রশ্নবিদ্ধ বিচারব্যবস্থা

রানা প্লাজার বিচার থমকে ১২ বছর: প্রশ্নবিদ্ধ বিচারব্যবস্থা

১২ বছর পেরিয়ে গেলেও বিচার শেষ হয়নি দেশের ইতিহাসের অন্যতম মর্মান্তিক শিল্প দুর্ঘটনা রানা প্লাজা ধসের মামলার। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ঢাকার সাভারে অবস্থিত রানা প্লাজা ধসে নিহত হন অন্তত ,১৩৫ জন শ্রমিক এবং আহত হন আরও সহস্রাধিক। ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ৫৯৪ জন সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ৯৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে।

বিচার প্রক্রিয়ার এই দীর্ঘসূত্রিতায় হতাশা প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী শ্রমিক মাসুদা খাতুন। তিনি বলেন, “এক যুগ ধরে আমরা অপেক্ষা করছি। কিন্তু যাঁরা এতগুলো শ্রমিকের মৃত্যুর জন্য দায়ী, তাঁদের কেউ শাস্তি পেলেন না।

ঢাকার জেলা জজ আদালতের প্রধান সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. ইকবাল হোসেন জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপক্ষ মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে তৎপর। তবে হতাহতের সংখ্যা বেশি হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের হাজির করতেই সময় লাগছে।

রানা প্লাজা ধস সংক্রান্ত মোট ২০টি মামলা হয়, যার মধ্যে তিনটি ছিল ফৌজদারি। একটি হত্যা মামলা করে পুলিশ, একটি ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে করে রাজউক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) করে আরেকটি মামলা ভবন নির্মাণে অনিয়ম নিয়ে।

হত্যা মামলার তদন্ত শেষ করতেই লেগে যায় দুই বছর। ছয় সরকারি কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করার অনুমতি না পাওয়ায় আরও দেরি হয়। অনুমতি না পেলেও ২০১৬ সালে তাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। পরের বছর অভিযোগ গঠনের আদেশ হয়।

এরপর মামলার সাত আসামি উচ্চ আদালতে আবেদন করে অভিযোগ গঠনের আদেশ চ্যালেঞ্জ করলে পাঁচ বছর বিচারকাজ স্থগিত থাকে। স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হলে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে সাক্ষ্যগ্রহণ আবার শুরু হয়।

বর্তমানে মামলায় আসামি ৩৮ জন, যার মধ্যে একমাত্র রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা কারাগারে আছেন। অভিযোগপত্রভুক্ত তিন আসামি মারা গেছেন।

বিচার না হওয়ার কারণে বিচারহীনতার সংস্কৃতিই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন শ্রমিকনেত্রী কল্পনা আক্তার। তিনি বলেন, “যদি দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতো, তবে অন্য মালিকরা সতর্ক হতেন। শ্রমিকদের জীবনের মূল্য দিতেন।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই মামলার বিচার শেষ করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এবং দোষীদের শাস্তির আওতায় আনবে।

অন্যদিকে, ভবন নির্মাণের দুর্নীতির মামলাটির বিচার প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তবে ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘনের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ এখনো বন্ধ রয়েছে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে।

 

You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?

আমাদের অনুসরণ করুন

জনপ্রিয় বিভাগ

সাম্প্রতিক মন্তব্য