অবশেষে ভারতের অশান্ত রাজ্য মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়েছে। দিন কয়েক আগেই মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন এন বীরেন সিং, তবে নতুন মুখ্যমন্ত্রী মনোনীত করতে না পারায় এই সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার এক সরকারি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি শাসনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু জানান, "আমি মণিপুরের রাজ্যপালের কাছ থেকে রিপোর্ট পেয়েছি। ওই রিপোর্ট ও অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ করে আমার মনে হয়েছে, সংবিধান অনুযায়ী রাজ্যে সরকার পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না।"
গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে মণিপুরে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। ২০২৩ সালের মে মাসে মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়, যা পরে দফায় দফায় নতুন করে সহিংসতায় রূপ নেয়। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ফের সংঘর্ষ শুরু হলে বহু ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়, বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। জনরোষের মুখে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের বাসভবনসহ একাধিক বিধায়কের বাড়িতেও হামলা হয়।
এই সংকট নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কারণে গত বছরের শেষ দিনে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং মণিপুরবাসীর কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চান। তবে তার পদত্যাগের পরও রাজ্যে নতুন নেতৃত্ব ঠিক করতে না পারায় প্রশাসনিক শূন্যতা তৈরি হয়, যা রাষ্ট্রপতি শাসনের পথ প্রশস্ত করে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা, দীর্ঘমেয়াদি সংঘর্ষ এবং প্রশাসনিক অচলাবস্থার কারণেই রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি শাসনের ফলে এখন রাজ্যের প্রশাসন সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে পরিচালিত হবে।
বর্তমানে মণিপুরে কারফিউ জারি রয়েছে এবং ইন্টারনেট পরিষেবা সীমিত করা হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সূত্র অনুযায়ী, সংঘর্ষে কয়েকশো মানুষ নিহত হয়েছেন এবং বহু মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।
পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি কীভাবে উন্নতি করা যায়, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার পদক্ষেপ নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?