clock ,

বাংলাদেশে শিশুদের সঙ্গে ‘আর কখনোই যেন এমনটি না ঘটে :ইউনিসেফ

বাংলাদেশে শিশুদের সঙ্গে ‘আর কখনোই যেন এমনটি না ঘটে :ইউনিসেফ

বাংলাদেশে গত জুলাই আগস্ট মাসে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোকে হৃদয়বিদারক উদ্বেগজনক বলে অভিহিত করেছেন ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স। তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের শিশুদের সঙ্গে যেন আর কখনো এমনটি না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে ইউনিসেফ সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক অফিসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ,৪০০ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে শতাধিক শিশু ছিল। ইউনিসেফ ইতোমধ্যে এসব মৃত্যুর বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছে এবং প্রকৃত সংখ্যা নিশ্চিত করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

রানা ফ্লাওয়ার্স আরও জানান, এই সময় নারীদের বিক্ষোভে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখতে শারীরিক নির্যাতন ধর্ষণের হুমকিসহ নানা ধরনের লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। শিশুরাও এই সহিংসতা থেকে রেহাই পায়নিঅনেককে হত্যা পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে। নির্বিচারে গ্রেপ্তার, অমানবিক পরিবেশে আটক রাখা এবং নির্যাতনের ঘটনাও ঘটেছে। ধানমন্ডিতে ২০০টি ধাতব গুলি ছোড়ার ফলে ১২ বছর বয়সী এক বিক্ষোভকারী অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণে মারা যায়। নারায়ণগঞ্জে ছয় বছর বয়সী এক কন্যাশিশু ছাদে দাঁড়িয়ে সংঘর্ষ দেখার সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়।

সবচেয়ে ভয়াবহ দিন ছিল আগস্ট। আজমপুরে পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে ১২ বছর বয়সী এক শিশু জানায়, ‘সব জায়গায় বৃষ্টির মতো গুলি চলছিল।সে অন্তত এক ডজন মৃতদেহ দেখেছিল সেদিন।

এই প্রেক্ষাপটে, ইউনিসেফ বাংলাদেশের নীতিনির্ধারক, রাজনৈতিক নেতা প্রশাসনের কাছে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে
. নিহত শিশুদের পরিবারের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ।
2. আটক শিশুদের মুক্তি ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া।
3. বিচার আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থার সংস্কার নিশ্চিত করা, যাতে ভবিষ্যতে কোনো শিশু অনিয়মিতভাবে আটক না হয়।

ইউনিসেফ এই লক্ষ্যে বেশ কিছু উদ্যোগ বাস্তবায়নে সহায়তা করতে চায়শিশুদের প্রতি সহিংসতা, নির্যাতন বেআইনি আটক প্রতিরোধে স্বাধীন তদন্ত নিশ্চিত করা। বিচার ব্যবস্থার সংস্কার করে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে শিশু সুরক্ষার আইনি কাঠামো গড়ে তোলা। শিশু অধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধে স্বাধীন পর্যবেক্ষণ নিরীক্ষণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। শিশুদের জন্য একটি ন্যায়সঙ্গত বিচার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, যেখানে তারা অপরাধী নয়, বরং সুরক্ষা পুনর্বাসনের উপযুক্ত বলে বিবেচিত হবে। শিশু অপরাধীদের পুনর্বাসন বিকল্প বিচার ব্যবস্থার দিকে নজর দেওয়া, কঠোর শাস্তির পরিবর্তে পুনর্বাসনমূলক কর্মসূচি গ্রহণ। শিশুদের জন্য বিশেষ আদালত, আইনি সহায়তা সংবেদনশীল তদন্ত ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। শিশু ভুক্তভোগীদের রক্ষা করা এবং ন্যায়বিচারের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, যাতে ভবিষ্যতে শিশুদের অধিকার লঙ্ঘন না হয়।

ইউনিসেফ মনে করে, বাংলাদেশ বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন রূপান্তরের পর্যায়ে রয়েছে। সংস্কার কমিশন পুলিশ, আদালত বিচার ব্যবস্থার পুনর্গঠনে কাজ করছে, যা তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ন্যায়সঙ্গত পরিবেশ গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।

 

You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?

আমাদের অনুসরণ করুন

জনপ্রিয় বিভাগ

সাম্প্রতিক মন্তব্য