clock ,

বৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে ‘অফিস অফ রিমাইগ্রেশন’ গঠনের পরিকল্পনা ট্রাম্প প্রশাসনের

বৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে ‘অফিস অফ রিমাইগ্রেশন’ গঠনের পরিকল্পনা ট্রাম্প প্রশাসনের

যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী জনসংখ্যার উপর নির্ভরতা কমাতে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এরই অংশ হিসেবে ট্রাম্প প্রশাসন একটি নতুন অভিবাসনবিষয়ক দপ্তর—‘অফিস অফ রিমাইগ্রেশন’—গঠনের পরিকল্পনা করেছে, যার কাজ হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অভিবাসীদেরচাই তারা বৈধ হোক বা অবৈধতাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে সহায়তা করা।

প্রভাবশালী প্রযুক্তি বিষয়ক সাময়িকী Wired জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের একটি প্রস্তাবিত পুনর্গঠনের আওতায় এই নতুন অফিস চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পররাষ্ট্র দপ্তরের পাঠানো ১৩৬ পৃষ্ঠার একটি পুনর্গঠন পরিকল্পনা ইতোমধ্যে সিনেট কংগ্রেসের ছয়টি কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে সিনেট ফরেন রিলেশনস কমিটি, হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটি এবং অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস কমিটি। এই পরিকল্পনার অনুমোদনের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে জুলাই পর্যন্ত।

পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য

নতুন এই অফিসের মূল লক্ষ্য হলো অভিবাসীদের সংখ্যা হ্রাস করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি সামাজিক কাঠামোকে অভিবাসন-নির্ভরতা থেকে সরিয়ে আনা।অফিস অফ রিমাইগ্রেশনঅভিবাসীদের স্বেচ্ছায় তাদের নিজ দেশে ফেরত যেতে উৎসাহিত সহায়তা করবে। এটি এমন এক ধরনের প্রশাসনিক কাঠামো তৈরি করবে, যা অভিবাসীদের দেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়টিকে নীতিগতভাবে উৎসাহ দেবে।

নজরদারির আওতায় বৈধ অভিবাসীরাও 

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উদ্যোগ শুধু অবৈধ অভিবাসীদের জন্য নয়, বরং দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বৈধ অভিবাসীরাও এর আওতায় পড়তে পারেন। বিশেষ করে যারা স্থায়ী নাগরিকত্ব পাননি বা অস্থায়ী কর্মসংস্থান ভিসায় আছেন, তাদের চাপের মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

পররাষ্ট্র দপ্তরের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন

এই পরিকল্পনার আওতায় শুধুঅফিস অফ রিমাইগ্রেশন নয়, বরং পররাষ্ট্র দপ্তরের অভ্যন্তরীণ কাঠামোতেও বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। যেমনগণতন্ত্র, মানবাধিকার শ্রম সংক্রান্ত ব্যুরো বিলুপ্ত করার প্রস্তাব রয়েছে। একই সঙ্গে নতুন উপসহকারী সচিব নিয়োগ, বিভিন্ন ব্যুরোর একীভূতকরণ, এবং ৩০০টিরও বেশি অফিসে রদবদল করার কথা বলা হয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান প্রতিক্রিয়া

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োজিত রিপাবলিকান সিনেটর মার্কো রুবিওর উদ্যোগেই পরিকল্পনাটি সামনে আসে। যদিও রুবিও তার বিবৃতিতে সরাসরিঅফিস অফ রিমাইগ্রেশন’-এর নাম উল্লেখ করেননি, তথাপি CNN এবং Axios জানিয়েছে, এই অফিস পরিকল্পনার অন্যতম প্রধান অঙ্গ।

রুবিও এক বিবৃতিতে বলেন, “এই পরিকল্পনা পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষতা কৌশলগত প্রভাব বাড়ানোর উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে। অভ্যন্তরীণ সংস্কার ছাড়া আধুনিক কূটনীতি সফল হবে না।

যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের বর্তমান অবস্থা

যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে বিশ্বের মোট অভিবাসীর এক-পঞ্চমাংশ বাস করে। পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশে জন্ম নেওয়া মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৭. মিলিয়নে, যা দেশটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ২০২২ সালে অননুমোদিত (অবৈধ) অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ১১ মিলিয়নের বেশি।

ট্রাম্প প্রশাসনের এই নতুন পরিকল্পনা অভিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য এক বড় ধাক্কা হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতি বৈদেশিক কূটনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

 

You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?

আমাদের অনুসরণ করুন

জনপ্রিয় বিভাগ

সাম্প্রতিক মন্তব্য