প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (FDI) সংক্রান্ত নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস ইন্ডিয়াকে ৩.৪৪ কোটি রুপি জরিমানা করেছে ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। পাশাপাশি ব্রিটিশ ব্রডকাস্টার সার্ভিসের (বিবিসি) তিন ডিরেক্টরকেও ১.১৪ কোটি রুপির বেশি জরিমানা করা হয়েছে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে নয়াদিল্লি ও মুম্বাইয়ের বিবিসি কার্যালয়ে আয়কর বিভাগের সমীক্ষার পর ইডি অভিযোগ তোলে যে, বিবিসি লভ্যাংশের শেয়ার এবং বিদেশি বিনিয়োগের নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু হয় এবং পরে জরিমানার আদেশ জারি করা হয়।
বিবিসির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, “আমরা ভারতসহ প্রতিটি দেশে আইন মেনে কার্যক্রম চালাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে এখন পর্যন্ত আমরা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট থেকে কোনো বিচারের আদেশ পাইনি। যেকোনো আদেশ পাওয়ার পর আমরা তা পর্যালোচনা করব এবং যথাযথ পদক্ষেপ নেব।”
ইডির এক কর্মকর্তা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, বিবিসি ইন্ডিয়াকে ৩.৪৪ কোটি রুপির জরিমানা ছাড়াও ২০২১ সালের ১৫ অক্টোবর থেকে প্রতিদিন ৫,০০০ রুপি অতিরিক্ত জরিমানা করা হয়েছে। বিবিসির তিন ডিরেক্টর—জাইলস অ্যান্টনি হান্ট, ইন্দু শেখর সিনহা এবং পল মাইকেল গিবনসকে পৃথকভাবে ১ কোটি ১৪ লাখ ৮২ হাজার ৯৫০ রুপি জরিমানা করা হয়েছে। ২০২৩ সালের ৪ আগস্ট বিবিসি ইন্ডিয়ার তিন ডিরেক্টর এবং ফাইন্যান্স হেডকে শোকজ নোটিশ পাঠানোর মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
বিবিসি বনাম ভারত সরকার
বিবিসির সঙ্গে ভারত সরকারের টানাপোড়েন নতুন কিছু নয়। ২০২৩ সালে বিবিসির তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোশ্চেন’ প্রকাশের পর বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে। এতে ২০০২ সালের গোধরাকাণ্ডে তৎকালীন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এরপরই আয়কর বিভাগ দিল্লি ও মুম্বাইয়ে বিবিসির অফিসে অভিযান চালায়, যা ৬০ ঘণ্টা ধরে চলে। অভিযোগ করা হয়, বিবিসি প্রায় ৪০ কোটি টাকার কর ফাঁকি দিয়েছে এবং কর্মীরা তদন্তে সহযোগিতা করেননি।
বিবিসির দাবি,“আমরা আয়কর বিভাগের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করছি এবং আশা করছি, দ্রুত এই বিষয়টির নিষ্পত্তি হবে।” তবে বিতর্কের মধ্যেই এবার ইডি থেকে বিবিসিকে নতুন করে বড় অঙ্কের জরিমানার নির্দেশ এলো।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?