পহেলা বৈশাখের সন্ধ্যায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে অনুষ্ঠিত হলো নজরকাড়া ও ব্যতিক্রমী এক ‘ড্রোন শো’। চীনা দূতাবাসের কারিগরি সহায়তায় এবং বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় আকাশজুড়ে শুরু হয় এই অভিনব আলোকচিত্র প্রদর্শনী।
শুধু বৈশাখী উদযাপন নয়, এই শো ছিল ইতিহাস, স্মৃতি ও প্রতিরোধের প্রতীকী উপস্থাপনা। ফুটিয়ে তোলা হয় মুক্তিযুদ্ধের দৃশ্য, ১৯৭১-এর গৌরব, এবং সাম্প্রতিক ‘জুলাই আন্দোলন’-এর শহীদ আবু সাঈদের বুক চিতিয়ে দাঁড়ানোর মুহূর্ত। ছিল আন্দোলনকামী ছাত্র মুগ্ধর পানি বিতরণের দৃশ্যও, যা আজ প্রতিরোধের নতুন প্রতীক।
শোতে ১৯৭১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়কে ধরা হয় আলোকচিত্রের মাধ্যমে। দেখা যায় “২৪-এর বীর” লেখা, ভাঙা পায়রার খাঁচা, ফিলিস্তিনের প্রতি সহমর্মিতা ও প্রার্থনার বার্তা, এবং বাংলাদেশ-চীন বন্ধুত্বের প্রতীকী চিত্র। একইসঙ্গে প্রতিবাদী তরুণদের কণ্ঠও যেন ধরা পড়ে—ড্রোনের আলোয় ভেসে ওঠে গণঅভ্যুত্থান এবং শেখ হাসিনার পতনের দাবিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রতীকী দৃশ্য।
ড্রোন শো’র আগেই বিকাল ৩টা থেকে শুরু হয় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে কনসার্ট। দিনব্যাপী আয়োজনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ছিল উৎসবমুখর—তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়সের মানুষের উপচে পড়া ভিড়ে জমে উঠে পহেলা বৈশাখের আয়োজন। তারা গানে, নাচে ও উদ্দীপনায় মেতে উঠেছিল নতুন বছরের বরণে, আর আকাশজুড়ে জ্বলজ্বল করছিল স্মৃতি ও ভবিষ্যতের প্রতিজ্ঞা।
এই আয়োজন প্রমাণ করে, বাংলা নববর্ষ আজ শুধুই উৎসবের দিন নয়—এটি হয়ে উঠছে স্মরণ, প্রতিবাদ আর নতুন স্বপ্নের মঞ্চ।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?