নিলামে উঠছে মারি অঁতোয়ানেতের নামে পরিচিত গোলাপি হীরা

ফরাসি সম্রাজ্ঞী মারি অঁতোয়ানেতের নামে পরিচিত একটি দুর্লভ গোলাপি হীরা উঠছে নিলামে। ১০ ক্যারেট ওজনের হীরাটি বিক্রি হবে নিউইয়র্কের রকফেলার সেন্টারে ক্রিস্টি’জের "Magnificent Jewels" নিলামে, আগামী ১৭ জুন। হীরাটির দাম ৩০ থেকে ৫০ লাখ মার্কিন ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর এপি।

ক্রিস্টি’জ জানায়, ঘুড়ি আকৃতির এই রত্নটি ১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ের বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং এটি একসময় মারি অঁতোয়ানেতের কন্যা ডাচেস মারি-থেরেসের মালিকানায় ছিল। হীরাটি বিখ্যাত জুয়েলারি ডিজাইনার জোয়েল আর্থার রোজেনথাল (জার)-এর নকশা করা একটি আংটিতে বসানো হয়েছে।

রাজকীয় কিংবদন্তি অনুসারে, ১৭৯১ সালে ফরাসি বিপ্লবের উত্তাল সময়ে প্যারিস থেকে পালানোর সময় মারি অঁতোয়ানেত নিজের মূল্যবান রত্নসম্ভার একজন বিশ্বস্ত হেয়ারড্রেসারের কাছে গচ্ছিত রাখেন। যদিও তিনি সেই রত্নগুলো আর ফিরে পাননি, পরে তাঁর মেয়ে মারি-থেরেসের কাছে সেগুলো হস্তান্তর করা হয় বলে বিশ্বাস করা হয়। এই গোলাপি হীরাটি সেই রত্নভাণ্ডারের অংশ ছিল বলেই ইতিহাসবিদদের ধারণা, যদিও নির্ভরযোগ্য প্রামাণ্য দলিল নেই।

হীরাটি সর্বশেষ জনসমক্ষে আসে ১৯৯৬ সালে, যখন এটি জেনেভায় এক নিলামে বিক্রি হয়। এরপর থেকে এটি ব্যক্তিমালিকানায় ছিল।

ক্রিস্টি’জের আন্তর্জাতিক গহনা বিভাগের প্রধান রাহুল কাদাকিয়া হীরাটিকে "বিশেষ ও বিরল এক নিদর্শন" হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “এটি সম্ভবত ভারতের ঐতিহাসিক গোলকোন্ডা খনি থেকে আহরিত একটি বেগুনি-গোলাপি হীরা, যার নির্মলতা ও রাজকীয় ঐতিহ্য একে অসাধারণ করে তুলেছে।”

মারি অঁতোয়ানেত ফ্রান্সের রাজা লুই ষোড়শের স্ত্রী ছিলেন। বিপ্লব-পূর্ব ফ্রান্সে তার বিলাসবহুল জীবনযাপন, দেশের আর্থিক সংকট ও রাজতন্ত্রের প্রতি জনরোষের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিলেন। অনেক ইতিহাসবিদের মতে, তার নামের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা "রুটি না পেলে কেক খাও" মন্তব্যটির ঐতিহাসিক সত্যতা নেই, তবে তা বিপ্লব-পরবর্তী সময়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে।