clock ,

চুম্বক ও বিরল খনিজ রপ্তানি বন্ধ: যুক্তরাষ্ট্রকে পাল্টা জবাব চীনের

চুম্বক ও বিরল খনিজ রপ্তানি বন্ধ: যুক্তরাষ্ট্রকে পাল্টা জবাব চীনের

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বিরল খনিজ চুম্বক আমদানি করে যুক্তরাষ্ট্র, যার বড় অংশই আসে চীন থেকে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের উত্তাপের মধ্যেই এবার বড় ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে বেইজিং। দেশটি বিরল কিছু খনিজ পদার্থ চুম্বকের রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধ করে দিয়েছে।

নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চীন সরকার এরই মধ্যে দেশটির বিভিন্ন বন্দরে চুম্বকবাহী চালান পাঠানো বন্ধ করেছে। এর ফলে অস্ত্র, ইলেকট্রনিক্স এবং অন্যান্য ভোগ্যপণ্য তৈরিতে ব্যবহৃত এসব খনিজের সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের অটোমোবাইল নির্মাতা, অ্যারোস্পেস শিল্প, সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানি সামরিক সরঞ্জাম নির্মাতারা।

চীন সরকার সম্প্রতি একাধিকবার বৈঠক করে রপ্তানিনীতির খসড়া তৈরি করেছে। এতে উল্লেখ আছে, কোন কোন খনিজ এবং পণ্য রপ্তানি সীমিত বা স্থগিত করা হবে। এই খসড়া চূড়ান্ত হলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শিল্পসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খাত চীনের বিরল খনিজ চুম্বক থেকে স্থায়ীভাবে বঞ্চিত হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে 'প্রতিশোধমূলক' পদক্ষেপ হিসেবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেইজিং। এর আগে, মার্কিন প্রশাসন চীনা পণ্যে সর্বোচ্চ ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে। পাল্টা জবাবে চীনও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক ঘোষণা করে, যা ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে।

চীনের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের এসব শুল্ক আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নীতিমালা মৌলিক অর্থনৈতিক আইন লঙ্ঘন করছে। বেইজিংয়ের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, “শুল্ক আরোপ এখন কেবল একটি সংখ্যার খেলা। যুক্তরাষ্ট্রের এসব একতরফা পদক্ষেপ বিশ্বকে ভুল বার্তা দিচ্ছে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, এই শুল্কযুদ্ধ এমন সময় তীব্র হচ্ছে যখন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রই সংস্থাটির আপিল বোর্ডে বিচারক নিয়োগে বাধা দিয়েছে। ফলে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ নিষ্পত্তি করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

এদিকে, চীনের ঘোষণার পর ইউরোপের বড় বড় স্টক মার্কেটগুলোতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। প্রাথমিক উত্থানের পর তিনটি প্রধান সূচকই নিম্নমুখী হয়েছে। বিনিয়োগকারীরা ধারণা করছেন, শুল্ক যুদ্ধের ফলে পণ্যের চাহিদা কমে যাবে এবং দাম বেড়ে যাবে, যার ফলে লাভের হার কমবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধের এই নতুন অধ্যায় বৈশ্বিক বাজারের জন্য এক অস্থির সময়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে। দুই পরাশক্তির পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের অভিঘাত আনতে পারে।

 

You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?

আমাদের অনুসরণ করুন

জনপ্রিয় বিভাগ

সাম্প্রতিক মন্তব্য