clock ,

  ব্রেকিং নিউজ
clock
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বিরতি নিলে মস্তিষ্কে যে পরিবর্তন ঘটে

সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বিরতি নিলে মস্তিষ্কে যে পরিবর্তন ঘটে

সোশ্যাল মিডিয়ার অতিরিক্ত ব্যবহার কমিয়ে আনলে মস্তিষ্কের ডোপামিন চক্রে ভারসাম্য ফিরে আসে এবংব্রেইন রটনামে পরিচিত ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব, জানিয়েছেন গবেষকরা।

অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার

আপনি কি ফোনে স্ক্রল করতে গিয়ে অনেক সময় নষ্ট করছেন? আপনি একা নন। একজন প্রাপ্তবয়স্ক আমেরিকান প্রতিদিন গড়ে দুই ঘণ্টার বেশি সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যয় করেন। কিশোর-কিশোরীরা এর দ্বিগুণ সময় শুধু টিকটক বা ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মেই কাটায়।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, অভ্যাস মানসিক স্বাস্থ্য দৈনন্দিন জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে গুগলেসোশ্যাল মিডিয়া ডিটক্সবিষয়ে অনুসন্ধান ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা প্রমাণ করে মানুষও থেকে মুক্তি পেতে আগ্রহী।

মস্তিষ্কে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব

সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের মস্তিষ্কের ডোপামিন চক্রকে প্রভাবিত করে। প্রতিটি লাইক, কমেন্ট বা ভিডিও দেখার সময় মস্তিষ্কে ডোপামিন নামেভালো লাগাররাসায়নিক নিঃসরণ হয়। তবে অনবরত স্ক্রলিং এই প্রক্রিয়ার ভারসাম্য নষ্ট করে, ডোপামিনের মাত্রা কমিয়ে দেয় এবং স্বাভাবিক অনুভূতিতে ফিরে আসতে আরও বেশি সময় অনলাইনে কাটানোর প্রয়োজন হয়।
অ্যাডিকশন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ . আন্না লেম্বকি বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিরতি নিলে মস্তিষ্ক এই ডোপামিন চক্রকে পুনরায় ভারসাম্যপূর্ণ করতে পারে, যা বাধ্যতামূলক ব্যবহারের অভ্যাস থেকে মুক্তি দেয়।

গবেষণার ফলাফল

৩১ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ওপর পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, দুই সপ্তাহের সোশ্যাল মিডিয়া ডিটক্স শেষে মানসিক স্বাস্থ্য, ঘুমের মান এবং জীবনে সন্তুষ্টি উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে।

১০-১৯ বছর বয়সী ৬৫ জন কিশোরীর ওপর চালানো এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্র তিন দিনের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বিরত থাকায় তাদের আত্মসম্মান বৃদ্ধি পেয়েছে এবং শরীর নিয়ে লজ্জাবোধ কমেছে।

ডিটক্সের মানসিক চ্যালেঞ্জ

প্রথম কয়েকদিন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকা কঠিন হতে পারে। ডোপামিনের অভাবে উদ্বেগ বা আকাঙ্ক্ষা বেড়ে যেতে পারে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই অনুভূতি কমে যায় এবং নতুন অভ্যাস গড়ে ওঠে। গবেষক সারাহ উডরফ বলেছেন, ডিটক্স সফল করতে সঙ্গী থাকা বা একে অপরের সঙ্গে অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করা সহায়ক হতে পারে।

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে ভারসাম্য বজায় রাখা

ডিটক্স শেষে অতিরিক্ত ব্যবহার ঠেকাতে কিছু নিয়ম অনুসরণ করা জরুরি:

ফোনকে শোবার ঘরে না রাখা।

নোটিফিকেশন বন্ধ রাখা।

ধীরগতির আনন্দদায়ক অভ্যাস গড়ে তোলা, যেমন বাদ্যযন্ত্র বাজানো বা রান্না করা।

বিশেষজ্ঞরা বছরে নির্দিষ্ট সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া ডিটক্স করার পরামর্শ দিয়েছেন। এতে মস্তিষ্কের পুরস্কার-পদ্ধতি পুনরায় সাজানো এবং সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি সচেতনতা বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হয়।

সোশ্যাল মিডিয়া থেকে মাঝেমধ্যে বিরতি নেওয়া আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য, জীবনের মান এবং ভারসাম্যপূর্ণ অভ্যাস গড়ে তুলতে সহায়ক হতে পারে।

You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?

আমাদের অনুসরণ করুন

জনপ্রিয় বিভাগ

সাম্প্রতিক মন্তব্য