বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘু নেতা ভবেশ চন্দ্র রায়ের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ভারত সরকারের উদ্বেগ ও মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। শনিবার এক বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, "ভবেশ চন্দ্র রায়ের মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে দুঃখিত। তবে এটিকে সংখ্যালঘুদের ওপর ‘সংগঠিত নিপীড়নের ধারাবাহিকতা’ হিসেবে তুলে ধরা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং অগ্রহণযোগ্য।"
তিনি জোর দিয়ে বলেন, "বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেখানে ধর্ম, জাতি বা পরিচয় নির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কেউ সরকারের প্রশ্রয়ে নিপীড়নের শিকার—এ ধরনের ধারণা চরম বিভ্রান্তিকর।"
ভবেশ রায়ের মৃত্যুর ঘটনাটি প্রসঙ্গে প্রেস সচিব জানান, নিহত ব্যক্তি তার পূর্বপরিচিত কয়েকজনের সঙ্গে স্বেচ্ছায় বাইরে গিয়েছিলেন এবং তার পরিবারের পক্ষ থেকেও কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির কথা জানানো হয়নি।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, তার দেহে কোনো দৃশ্যমান আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিরূপণে ভিসেরা বিশ্লেষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং রিপোর্টের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান শফিকুল আলম।
তিনি আরও বলেন, “আমরা সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি—এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যেন বিভ্রান্তিকর, উসকানিমূলক ও কূটনৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য বক্তব্য পরিহার করা হয়। এটি একটি মানবিক বিষয়, এটিকে রাজনৈতিক বা ধর্মীয় রূপ দেওয়ার চেষ্টা অপ্রত্যাশিত।”
এর আগে শনিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক্স-এ (সাবেক টুইটার) দেওয়া বিবৃতিতে ভবেশ রায়ের হত্যাকে ‘হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর সংগঠিত নিপীড়নের ধারাবাহিকতা’ হিসেবে উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “এই হত্যাকাণ্ড এমন এক ধারাবাহিক নিপীড়নের অংশ, যেখানে অপরাধীরা শাস্তির বাইরে থেকে যাচ্ছে।”
ভবেশ চন্দ্র রায় ছিলেন দিনাজপুর জেলার একজন হিন্দু সমাজসেবক। সম্প্রতি তার মরদেহ উদ্ধার হওয়ায় রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?