বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার সন্তানদের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ উঠে আসছে। সর্বশেষ অভিযোগগুলো ঘিরে রয়েছে শেখ রেহানার মেয়ে, যুক্তরাজ্যের দুর্নীতি দমন মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার ভাই-বোন রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিককে।
টিউলিপের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ
সম্পত্তি-সংক্রান্ত বিতর্কে যুক্ত হয়ে টিউলিপ সিদ্দিক চাপে রয়েছেন। বিনামূল্যে একটি ফ্ল্যাট পাওয়ার তথ্য গোপন করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি বাড়ছে। জানা গেছে, ফ্ল্যাটটি আওয়ামী লীগ-ঘনিষ্ঠ এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তিনি বিনামূল্যে পেয়েছেন।
এছাড়াও, নতুন একটি অভিযোগে উঠে এসেছে, টিউলিপ তার বোন আজমিনার মালিকানাধীন ৬.৫ লাখ পাউন্ড মূল্যের আরেকটি ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন। ওই ফ্ল্যাটটিও তাদের খালার উপদেষ্টার কাছ থেকে পাওয়া। পাশাপাশি উত্তর লন্ডনে তাদের মা যে ১৪ লাখ পাউন্ডের বাড়িতে থাকেন, সেটির মালিক বাংলাদেশের একটি বিশাল শিল্পগোষ্ঠীর কর্মকর্তা, যার বাবা শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন।
ভাই-বোনের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা অভিযোগ
টিউলিপের ভাই রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক এবং বোন আজমিনা সিদ্দিক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পরিচালিত থিংকট্যাঙ্ক সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। রাদওয়ান এই থিংকট্যাঙ্কের ম্যাগাজিন হোয়াইটবোর্ড-এর সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
সম্প্রতি, ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য টাইমস জানিয়েছে, সিআরআইয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি নেটওয়ার্ক মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর কাজে লিপ্ত ছিল। বিশেষ করে নির্বাচন এবং আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির বিরুদ্ধে এসব প্রোপাগান্ডা পরিচালিত হয়েছে।
মেটার তদন্তে দেখা গেছে, ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক এবং টেলিগ্রামে সক্রিয় থাকা ভুয়া অ্যাকাউন্টগুলোর মাধ্যমে নির্বাচন ও বিরোধী দলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরা হতো। এই নীতিমালা লঙ্ঘনের দায়ে মেটা ৫০টি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয় এবং প্রোপাগান্ডার সঙ্গে আওয়ামী লীগ-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের যোগাযোগের প্রমাণ পায়।
যদিও সিআরআইয়ের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ রয়েছে, তবু এখন পর্যন্ত রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক বা আজমিনা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে কোনো আর্থিক দুর্নীতি বা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
চাপ বাড়ছে টিউলিপের উপরে
যুক্তরাজ্যের সিটি মন্ত্রী হিসেবে আর্থিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব পালন করলেও, টিউলিপ নিজেই এখন আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের মুখোমুখি। বিনামূল্যে ফ্ল্যাট পাওয়ার ঘটনায় ব্রিটিশ সরকার শিগগিরই তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করতে পারে।
এই ঘটনাগুলো নিয়ে শেখ রেহানার সন্তানদের ঘিরে বিতর্ক আরও তীব্র হচ্ছে। তাদের কার্যক্রম নিয়ে সমালোচনা যেমন বাড়ছে, তেমনি তদন্তের দাবি জোরালো হচ্ছে।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?